সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: জঙ্গলমহলের শবর জনজাতির মধ্যে প্রথম মহিলা হিসেবে স্নাতকোত্তর (Post Graduation) হলেন শবর কন্যা রমনিতা। খেড়িয়া জনজাতির মধ্যে তিনিই প্রথম স্নাতক হয়েছিলেন। এবার পুরুলিয়ার সিধো কানহো বীরসা বিশ্ববিদ্যালয় (Sidho Kanho Birsa University) থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর পাশ করলেন তিনি। এই খবরে খুশির আমেজ দেখা দিয়েছে শবর জনজাতিভুক্ত সমপ্রদায়ের মধ্যে।
স্নাতকোত্তর হলেন শবর কন্যা রমনিতা: 'ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়'। আবারও তা সত্যি করলেন শবর কন্যা রমনিতা। আর্থিক বাধা কাটিয়ে অদম্য জেদকে সঙ্গী করেই স্নাতকোত্তর হলেন রমনিতা। এখন অধ্যাপিকা হওয়াই তাঁর লক্ষ্য। পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার ফুলঝোর গ্রামের মেয়ে রমনিতা শবর। পরিবার বলতে বাবা-মা ও তার দুই ভাইবোন। রমনিতার বাবা মহাদেব শবর কৃষিকর্মের সঙ্গে যুক্ত। মা বেহুলা শবর গৃহবধূ। ছোট থেকেই লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তাঁর। সব বাধা বিপত্তিকে পিছনে ফেলে স্নাতকোত্তর হলেন রমনিতা। পুরুলিয়ার কস্তুরবা হিন্দি বালিকা বিদ্যালয় থেকে হিন্দিতে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন রমনিতা। ঝাড়খন্ডের পটমদা কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন। এরপরই সিধো কানহো বীরসা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতোকোত্তর হলেন তিনি। তবে এখানেই থেমে থাকতে নারাজ রমনিতা। আগামী দিনে আরও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান।
কী প্রতিক্রিয়া ছাত্রীর অধ্যাপকের? ছাত্রীর সাফল্যে খুশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রথম দিন ওঁকে দেখেই মনে হয়েছিল অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত ছাত্রী। তার সঙ্গে ব্যবহারও বিনম্র। সবর সম্প্রদায় থেকে রমনিতা প্রথম স্নাতকোত্তর পড়তে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম হয়েছে। ক্লাসে প্রতিদিন উপস্থিত থাকত। ইতিহাস সম্পর্কে যে প্রশ্ন, জানার আগ্রহ মুগ্ধ করেছিল। ভবিষ্যতে রমনিতা মুখ উজ্জ্বল করবে।’’ রমনিতার কথায়, “এরপর বি.এডে ভর্তি হতে চাই। নেট এবং সেটের জন্য পড়াশোনা শুরু করেছি। নেট পাশ করাই এখন মূল লক্ষ্য। শবর জনজাতির উদ্দেশে বলব, আরও পড়াশোনা এগোতে হবে। শিক্ষাটাই মূল লক্ষ্য করতে হবে। আমি অধ্যাপিকা হতে চাই। তার পাশাপাশি যাঁরা বিভিন্ন দিক পিছিয়ে পড়েছে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে চাই।’’
আরও পড়ুন: Bankura News: রান্নাঘরে গ্যাসের সিলিন্ডার ফেটে বিপত্তি, বিষ্ণুপুরে নার্সিংহোমে আগুন