ঝড়খালি : ফের সুন্দরবনের ( Sundarban )  জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলার কবলে পড়লেন এক মৎস্যজীবী। শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের নেতিধোপানীর কাছে পীরখালির জঙ্গলে। নদীর চরে কাঁকড়া ধরার সময় মৃত্যুঞ্জয় সুতার নামে এক মৎস্যজীবীকে বাঘে তুলে নিয়ে যায়। বয়স মাত্র ২৮।


ঝড়খালি ( Jharkhali ) আশ্রম পাড়ার বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় শনিবার সকালে সঙ্গীদের সাথে বেরিয়েছিলেন মাছ, কাঁকড়া ধরতে। সেখানেই ঘটে যায় এমন ভয়ানক ঘটনা।  ইতিমধ্যেই বিষয়টি বন দফতরকে জানিয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গীরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বন দফতর।


পাশাপাশি এলাকায় মৃত্যুঞ্জয়ের খোঁজে চলছে বলে জানিয়েছে বন দফতর। তবে এই ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঠিক একদিন আগে ঝড়খালির আরও এক মৎস্যজীবী সুশান্ত প্রামাণিক বাঘের কবলে পড়ে প্রাণ হারান। তবে সঙ্গীরা বাঘের সাথে লড়াই করে তাঁর দেহ উদ্ধার করে আনে। কিন্তু এবার মৃত্যুঞ্জয়কে ফিরিয়ে আনতে পারেনি তাঁর সঙ্গীরা।


প্রসঙ্গত সুন্দরবনের জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় মাছ-কাঁকড়া ধরাই বহু মানুষের জীবন জীবীকা। অনেকেই প্রাণ হাতে করে এই কাজ করতে যান। এর আগেও বহুবার বাঘের হানায় মৎস্যজীবীদের মৃত্যু হয়েছে। এখানে মৎস্যজীবীদের বাঘের হামলার মুখে পড়া নতুন কিছু নয়। ২০২২ এও একাধিক বাঘের হামলায় প্রাণ যাওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছিল। 


গত জুলাই মাসে সুন্দরবনে  কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের  হামলায় পড়েন এক মৎস্যজীবী (fisherman)।  সুন্দরবনের বিজুয়াড়া জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে  গুরুতর আহত হন এক মৎস্যজীবী। আহত মৎস্যজীবীর নাম ছিল দিলু মল্লিক । তিনি পাথরপ্রতিমার বাসিন্দা।


কিছুদিন আগেই বাঘের আতঙ্ক ছড়ায় মৈপীঠের গৌড়ের চক গ্রামে। তিনদিন ধরে ছড়ায় বাঘের আতঙ্ক। শেষমেষ স্বস্তিতে ফেরে মৈপীঠের গৌড়ের চক গ্রাম। খাঁচায় ধরা না পড়লেও, বনকর্মীদের তাড়া খেয়ে নদীতে সাঁতরে আজমলমাড়ি জঙ্গলে নিজের আস্তানায় ফিরে যায় দক্ষিণ রায়। ঘটনার কয়েকদিন আগে থেকেই কুলতলির এই গ্রামে বাঘের আনাগোনা টের পাচ্ছিলেন বাসিন্দারা। লোকালয়ে মিলছিল পায়ের ছাপ। এতেই রাতের ঘুম উড়ে যায় গ্রামবাসীদের। তারপর  খাঁচা পাতে বন দফতর। যদিও সবাইকে ফাঁকি দিয়ে রাতে খাঁচা পর্যবেক্ষণ করেই গা ঢাকা দেয় সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। খাঁচার আশপাশে মেলে তার পায়ের ছাপ। তারপরের দিন সাঁতরে নিজের ডেরায় ফিরে যায় রয়্যালবেঙ্গল। 
অন্যদিকে, পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুর কোস্টাল থানার উপেন্দ্রনগরে ঠাকুরান নদীর চরেও কয়েকদিন আগে মেলে বাঘের পায়ের ছাপ। তিনদিন আগে গ্রামবাসীরা পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে ভুগতে থাকেন। খাঁচা না পাতলেও পুলিশ ও বন দফতরের তরফে চলে টহল। বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রামবাসীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়।