গৌতম মণ্ডল, সুন্দরবন : সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমায় ফের বাঘের আতঙ্ক। স্থানীয় সূত্রে খবর, উপেন্দ্রনগর এলাকায় ঠাকুরান নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে। বন দফতরের তরফে ছাগলের টোপ দিয়ে খাঁচা পাতা হয়েছে বাঘ ধরার জন্য। তবে ৪ দিন কেটে গেলেও, এখনও খাঁচাবন্দি করা যায়নি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে। বাঘের আতঙ্কে কাঁটা হয়ে রয়েছেন এলাকার লোকজন। বনকর্মীদের তরফে জঙ্গল লাগোয়া এলাকা ফেন্সিং দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। এলাকায় নাগাড়ে চলছে সতর্কতা প্রচার। গতকাল সেখানে এসে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন তৃণমূল বিধায়ক সমীর জানা।
সুন্দরবনে বাঘের আতঙ্ক নতুন ঘটনা নয়। তবে এবার চারদিন কেটে গেলেও টোপ দিয়ে পাতা ফাঁদে পা দেয়নি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। স্বভাবতই আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। মাইকিং করে সতর্ক বার্তা প্রচার চলছে যে এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে, তার সংলগ্ন এলাকায়। তৎপর রয়েছেন বনদফতরের কর্মীরাও। যেকোনও সময় লোকালয়ে ঢুকে পড়তে পারে বাঘ। এই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবিকা নির্বাহ হল মাছ, কাঁকড়া ধরে। এছাড়াও এই এলাকায় রয়েছে প্রচুর ধানের জমি। সেখানে ফসল হয়েছে। ধান কাটার সময় এসেছে। অথচ স্থানীয়রা ধান কাটতে যেতে পারছেন না জমিতে। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় থাকা গ্রামের বাসিন্দারা ভয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, দিনের বেলা আশপাশের লোক বেরোলে তবে তাঁরা বাড়ির বাইরে বেরোতে পারছেন। সূর্যের আলো না থাকলে বাড়ি থেকে বেরনো কার্যত বন্ধ তাঁদের। নানা রকমের অসুবিধা হচ্ছে তার জেরে। কিন্তু বাঘের ভয়ে কেউই বাড়ির বাইরে বেরোতে পারছেন না সন্ধের পর।
বনদফতরের তরফে জানানো হয়েছে বাঘটি রিজার্চ ফরেস্ট এলাকাতেই রয়েছে। কিন্তু যেহেতু জঙ্গলের একদম লাগোয়া রয়েছে একটি গ্রাম, তাই নিরাপত্তার একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সেই জন্যই ফেন্সিং দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে পুরো এলাকা। জোরকদমের চলচহে নজরদারি। মাইকে চলছে প্রচারও। এখন অপেক্ষা কবে বাঘ ধরা পড়ে। এর আগে দেখা গিয়েছে, ভিনরাজ্য থেকেও এই রাজ্যে চলে এসেছে বাঘ। সেই বাঘকে বাগে আনতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল বনদফতরের কর্মীদের। এবার পরিস্থিতি জটিল না হলেও চিন্তার কারণ রয়েছে, কারণ বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও বাঘটি ধরা পড়নি। বাঘ ধরতে এবং এলাকার পরস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যথেষ্ট চেষ্টা চালাচ্ছে বনদফতর।