সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির সব মামলা (Primary Recruitment Scam Case) সরল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাস থেকে। এমনই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, মত আইনজীবীদের একাংশের। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসের প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির সব মামলা অন্য বিচারপতিকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে, নিয়োগ-দুর্নীতির সব মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরানো হয়েছে বলে মত দিয়েছে আইনজীবীদের অন্য একটি অংশ। এই পরিস্থিতিতে ওয়েবসাইটে আপলোড হওয়ার পরেই জানা যাবে সুপ্রিম কোর্টের বিস্তারিত নির্দেশ।


এদিকে স্বচ্ছতার কারণে এবার সাক্ষাৎকারের অনুবাদ চাইলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রেজিস্ট্রার জেনারেলের রিপোর্টের কপি চেয়ে পাঠালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেলের কাছ থেকে চেয়ে পাঠান। আজ রাত ১২টার মধ্যে পেশ করার নির্দেশ । রাত ১২:১৫ মিনিট পর্যন্ত চেম্বারে অপেক্ষা করবেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি বিচারপতির মন্তব্য, 'কুণাল ঘোষকে প্রণাম জানাব। কারণ তিনি যা ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন আজ তা মিলে গেছে। তিনি এত বড় ভবিষ্যৎদ্রষ্টা সেটা আমার জানা ছিল না।'


সুপ্রিম কোর্টে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের (Abhishek Banerjee) মামলায় উঠে এসেছে এবিপি আনন্দকে দেওয়া কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ। এর আগে তাঁর নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ায় সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। বিচারপতির সাক্ষাৎকার নিয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে হলফনামা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এসবের ২৪ ঘণ্টার মধ্য়ে এনিয়ে মুখ খোলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। মঙ্গলবার এজলাসে এসে তিনি আচমকা বলেন, কে রটাচ্ছে আমি পদত্যাগ করছি ? আমি পদত্যাগ করছি না। এরপর আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, যে লড়াই শুরু হয়েছে , সে লড়াই চলবে। বিভিন্নভাবে লড়াই চলবে। আমি তো চিরকাল এখানে থাকব না, কিন্তু লড়াই চলবে।


গত ১৩ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় মন্তব্য় করেন, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এবং কুন্তল ঘোষকে খুব দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত CBI, ED-র। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। যার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত।


আরও পড়ুন ; মাছ খান না? ডিমে অ্যালার্জি? প্রোটিন মিলবে কীভাবে?


গত সোমবার সেই মামলার শুনানিতে এবিপি আনন্দকে দেওয়া বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ টানেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের আইনজীবী অভিষেক মনুসিঙ্ঘভি। আবেদনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের অনুবাদও জমা দেন তাঁরা। এরপর প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পি এস নরসিম্হার বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে কথা বলে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে জানাতে হবে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় ওই সাক্ষাৎকারে কী বলেছিলেন। বৃহস্পতি বারের মধ্য়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে হলফনামা দিতে হবে।


এদিকে মঙ্গলবার এজলাসে এসে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। আমাকেই এর ব্যাখ্যা দিতে হবে। আমি ইন্টারভিউ দিয়েছি, আমাকেই ব্যাখ্যা দিতে হবে। যা বলিনি, সেটা নিয়েই অভিযোগ করা হচ্ছে।


আজ ছিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেখানেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া সাক্ষাৎকারের তর্জমার সত্যতা বিচার করে মামলা সরানোর নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। তাঁর এজলাসের মামলা অন্য বিচারপতিকে দিতে বলা হয়েছে।


আরও পড়ুন ; স্বপ্নে পূর্বপুরুষদের দেখছেন ? এর অর্থ কী ?