বিজেন্দ্র সিংহ, শিবাশিস মৌলিক ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, সুপ্রিম কোর্ট: স্বচ্ছতা বজায় রেখে স্থায়ী উপাচার্য (Permanent VC) নিয়োগ করা উচিত। আচার্য (Chancellor) ও রাজ্য সরকার, দুপক্ষ মিলে এই সমস্যার সমাধান করতে পারলেন না কেন? উপাচার্য (VC) নিয়োগ মামলার পর্যবেক্ষণে এ কথাই বলল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থই যে সবার আগে, তাও বোঝাল আদালত। এই প্রেক্ষাপটেই উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী চাপানউতোর।


প্রেক্ষাপট...
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সরকারের সংঘাতের আবহ। ঠিক এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের দায়ের করা মামলায় আচার্য ও রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকার, উভয়েরই দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিল সর্বোচ্চ আদালত। পাশাপাশি এক্ষেত্রে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থই যে সবার আগে, তাও বুঝিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, আচার্য-রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে একতরফা উপাচার্য নিয়োগের যে অভিযোগ করেছিল রাজ্য সরকার। সেই অভিযোগের বিষয়েও এখনই কোনও হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট। তৃণমূল বিধায়ক ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, 'শীর্ষ আদালতের মন্তব্যকে স্বাগত, আমরাও আলোচনা করতে চেয়েছি উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে, বারবার বলেছি কিন্তু শোনা হয়নি। আমাদের দিক থেকে কোন স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতা নেই। অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যর ক্ষেত্রে আমরা আলোচনা চেয়েছিলাম, আলোচনা করা হয়নি। আচার্য বিল ফেলে রাখা হয়েছে। সার্চ কমিটি, সেটাও ফেলে রাখা হয়েছে।' এর আগে আচার্য ও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, রাজ্যের ৮টি বিশ্ববিদ্য়ালয়ে নতুন অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ এবং ৩ জন উপাচার্যের মেয়াদ বৃদ্ধির নির্দেশ দেন। তখন থেকেই এই সংঘাত সপ্তমে পৌঁছেছে। এই নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। কিন্তু, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাতেই মান্যতা দেয় হাইকোর্ট। এরপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যখন বাংলাজুড়ে তোলপাড় চলছে, তখন এদিন উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছে, স্বচ্ছতা বজায় রেখে নিয়োগ প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। আচার্য নাকি রাজ্য সরকার, কে সবচেয়ে দক্ষ, আমরা তা নিয়ে ভাবিত নই। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কেন, উভয়ে মিলে সমস্যার সমাধান করতে পারলেন না? সমস্ত যোগ্য প্রার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে, যোগ্যতমকে বেছে নেওয়া হোক। 
সুপ্রিম কোর্ট এদিন জানতে চায়, আচার্যকে কি এই মামলায় পক্ষ করা হয়েছে?রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি জানান,আচার্য এই মামলায় পক্ষ নন। তবে সেটা করার জন্য যা পদক্ষেপ নেওয়ার, আমরা করব। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট,সবপক্ষ নোটিস দেওয়ার কথা বলে, ২ সপ্তাহ পরে মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানিয়েছে।



আরও পড়ুন:অবৈধ নির্মাণের অভিযোগে বাড়ির একাংশ ভাঙাকে কেন্দ্র করে কলকাতাতেই প্রকাশ্যে তৃণমূলের 'গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব'