বিজেন্দ্র সিংহ, প্রবীর চক্রবর্তী, রঞ্জিত হালদার, নয়াদিল্লি: সন্দেশখালিকাণ্ডে উত্তাল গোটা রাজ্য। সেই আবহেই মণিপুরের সঙ্গে সন্দেশখালির তুলনা চলে না বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সন্দেশখালি নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে মামলা করেছিলেন এক আইনজীবী (Sandeshkhali Case)। সেই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানায়, কলকাতা হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছে। তাদেরও ক্ষমতা আছে CBI তদন্ত বা SIT গঠনের নির্দেশ দেওয়ার। শীর্ষ আদালত থেকে মামলা প্রত্যাহার করেছেন মামলাকারী আইনজীবী। (Supreme Court)


সন্দেশখালিকাণ্ডকে ঘিরে এই মুহূর্তে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। সেই আবহেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন পেশায় আইনজীবী অলোক শ্রীবাস্তব। মণিপুরের হিংসা মামলায় যেমন তিন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের নিয়ে কমিটি গড়েছিল সুপ্রিম কোর্ট, সন্দেশখালির ক্ষেত্রেও ঠিক সেভাবে কমিটি গঠনের পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে সিবিআই তদন্ত বা SIT গঠন করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তোলেন তিনি।

এর পাশাপাশি, অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আর্জি জানিয়ে মামলা করেছিলেন। কিন্তু সোমবার বিচারপতি বিভি নাগারত্না এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহ্-র বেঞ্চ কোনও আর্জিই শুনল না। বরং মামলাকারীর উদ্দেশে বিচারপতি নাগারত্ন বলেন, "সুপ্রিম কোর্টে শুনানির কোনও প্রয়োজন নেই। কলকাতা হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছে। আপনি সেখানে আর্জি জানান।"


আরও পড়ুন: Aadhar Deactivation Allegations: রাতারাতি নিষ্ক্রিয় বহু আধার কার্ড, মাথায় হাত সাধারণের, তরজা রাজনীতিতে

অন্য দিকে মামলাকারী অলোক বলেন, "মণিপুর মামলায় সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করেছে।" এর জবাবে বিচারপতি বলেন, "এই মামলার (সন্দেশখালি) সঙ্গে মণিপুরের তুলনা করবেন না।" সুপ্রিম কোর্টের এই বক্তব্যের পরই ময়দানে নেমে পড়ে তৃণমূল। মহুয়া মৈত্র এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, 'সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে, সন্দেশখালির সঙ্গে মণিপুরের তুলনা চলে না। তদন্ত চেয়ে করা আবেদন, প্রত্য়াহার করতে বাধ্য় হয়েছেন আইনজীবীরা। বিজেপির প্রচারযন্ত্র আজ (সোমবার) একটু বিগড়ে গিয়েছে'।


এর পর, মামলাকারী আইনজীবী আরও বলেন, হাইকোর্টে মামলা হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন যে, সন্দেশখালিতে কোনও ধর্ষণ হয়নি।মামলাকারী ফের আর্জি জানান, মণিপুরের মতো যেন সুপ্রিমকোর্ট এই তদন্ত পর্যবেক্ষণ করে। তখন বিচারপতি বলেন, "আমরা আগেও বলেছি, মণিপুরের সঙ্গে তুলনা করবেন না। কলকাতা হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছে, তাদেরও ক্ষমতা আছে CBI তদন্ত বা SIT গঠনের নির্দেশ দেওয়ার। সেখানে কি হস্তক্ষেপ করা উচিত?" রাজ্য সরকারের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টকে জানান, "আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। গ্রেফতারও করা হয়েছে।"


তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "সন্দেশখালি নিয়ে আদদালত বলে দিয়েছে যে, এই ঘটনার সঙ্গে মণিপুরের কোনও তুলনা চলে না। আর তার পরই সন্দেশখালি নিয়ে অমুক-তমুক দাবি করা বিরোধীদের আইনজীবীরা পিটিশন তুলে নিচ্ছেন বলে খবর। এটাই তো স্বাভাবিক! রায় থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। কুৎসা বন্ধ হোক।"