পূর্ণেন্দু সিংহ, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, বাঁকুড়া: জয়া দত্ত থেকে মণিশঙ্কর মণ্ডল। তৃণমূল (TMC) ছাত্র পরিষদের (TMCP) একাধিক প্রাক্তন নেতা-নেত্রীকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে বিস্ফোরক দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। অভিযোগ মানতে চাননি TMCP-র কোনও প্রাক্তন নেতা-নেত্রীই।


দুর্নীতি নিয়ে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর


স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগ এবং  গ্রুপ-ডি, গ্রুপ-সি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য (SSC Recruitment Scam)। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে CBI। নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে কলেজ সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধেও! 


এই পরিস্থিতিতে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাঁকুড়ার সোনামুখীতে বিজেপির (BJP) এক কর্মীসভায় তিনি দাবি করেন, রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে, তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের নেতা-নেত্রীদের অবৈধভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে। 


এ দিন শুভেন্দু বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রেও ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। জয়া দত্ত-সহ তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের নেতানেত্রীদেরকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধভাবে এই ডাকাত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব নিয়োগ করা হয়েছে।"

জয়া দত্ত, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন রাজ্য সভানেত্রী।  বর্তমানে তিনি বারাসাত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার - প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট। ২০১৯ সালে চাকরিতে যোগ দেন তিনি।


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: 'বিচার ব্যবস্থায় কিছু মানুষ তল্পিবাহকের কাজ করছেন', একের পর এক মামলায় সিবিআই তদন্ত নিয়ে অভিষেক


শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি দাবি করেছেন, বিজ্ঞাপন দেখে, পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছি। শুভেন্দু অধিকারী পারলে প্রমাণ করেন দেখান, অবৈধভাবে চাকরি পেয়েছি। শুধু জয়া দত্ত নয়, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের আরও অনেক প্রাক্তন নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। 


শুভেন্দুর কথায়, "বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই অ্যাকাউন্টে, কুণাল সামন্ত অ্যাকাউন্স অফিসার করা হয়েছে। একইভাবে মণিশঙ্কর মণ্ডল। অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসার করা হয়েছে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ে। লগ্নজিতা চক্রবর্তীকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে, শাওনি ভট্টাচার্যকে তিনি ওএসডি ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের, তাঁকেও করা হয়েছে।"


TMCP-র প্রাক্তন রাজ্য সহ সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডল সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক। শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনিও। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের TMCP-র প্রাক্তন নেত্রী লগ্নজিতা চক্রবর্তী বর্তমানে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত।  বিরোধী দলনেতার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি।


শুভেন্দুর দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন সকলেই
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের TMCP-র আরেক প্রাক্তন নেতা কুণাল সামন্ত, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টস অফিসার হিসেবে চাকরি করছেন। শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁর জবাব, "বিরোধী দলনেতার কোনও যোগ্যতা নেই। তিনি এরকম কথা বলেন। তাই কোনও প্রতিক্রিয়া দেব না।" প্রতিক্রিয়া দেননি শাওনিও।