কলকাতা : রামপুরহাটকাণ্ড (Rampurhat Violence) নিয়ে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে চাপ বাড়াচ্ছে বিজেপি। আজ বিধানসভায় এক দফা তুলকালাম হওয়ার পর, এবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউর প্রতিবাদ মঞ্চ থেকেও সরব হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের "কিছু দল ল্যাংচা খেতে খেতে ঢুকছে ল্যংচাতে ল্যংচাতে", এই মন্তব্যের পাল্টা কটাক্ষ ছুঁড়ে দিলেন শুভেন্দু। বললেন, "ভোটের সময় ভাল পায়ে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে আপনি লেংচে লেংচে গোটা রাজ্য ঘুরে বেরিয়েছেন ভোট জোগাড় করার জন্য।"
রামপুরহাট হত্যাকাণ্ড নিয়ে আজ বিধানসভায় তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয়। তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়কদের হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এর জেরে ভাঙে বিজেপি বিধায়কের চশমা । অধ্যক্ষের সামনেই সাদা পোশাকের পুলিশ এনে হামলা চালানো হয় বলে দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারী, মনোজ টিগ্গা, শঙ্কর ঘোষ, দীপক বর্মন, নরহরি মাহাতোকে সাসপেন্ড করেন অধ্যক্ষ। বিধানসভার অধিবেশনও মুলতুবি করে দেন অধ্যক্ষ।
এদিকে রামপুরকাণ্ডের আঁচ পড়ে কলকাতার রাজপথেও। এর প্রতিবাদে রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত মিছিল করে গেরুয়া শিবির। বিধানসভায় হামলার অভিযোগেও প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিজেপির প্রতিবাদমঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নেন শুভেন্দু। বলেন, "রামপুরহাট সাত ঘণ্টার জার্নি। এক কাপ চা, একটু মুড়ি-ছোলা বা কেউ হয়তো একটু মিষ্টি মুখে দিয়েছেন। তাঁদের এত দূর জার্নি করতে হবে। তাঁদের মধ্যে বয়স্ক মহিলা ছিলেন। অনেক বয়স্ক মানুষ ছিলেন। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর ভাষা দেখুন। ওইদিন নেতজি ইনডোরে বললেন, ল্যাংচা খেয়ে ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে কিছু জন বগটুইয়ে যাচ্ছেন। আরে আমরা ল্যাংচাইনি। ভোটের সময় ভাল পায়ে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে আপনি লেংচে লেংচে গোটা রাজ্য ঘুরে বেরিয়েছেন। ভোট জোগাড় করার জন্য। নন্দীগ্রামের লোক আপনার টুপি পরেননি। ১৯৫৬ ভোটে আপনি হেরেছেন। অন্য জায়গার লোককে টুপি পরিয়েছেন। টুপি পরিয়েছেন কাদের ? সংখ্যালঘু মুসলমানদের। আনিস খানকে খুন করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের পুলিশ।"
বগটুইয়ের ঘটনা তুলে ধরে বলেন, "রামপুরহাটে ৯জন মহিলা, ২ জন শিশু-১১ জনই কিন্তু সংখ্যালঘু মুসলমান। মারল কে ? তৃণমূল। মেরেছে কাকে ? তৃণমূলকে। জেলে কে ? তৃণমূল। ক্ষতিপূরণ কে পাচ্ছে ? তৃণমূল। পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘুরা একটু ভাবুন। কাদের দল বেঁধে ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন ?"
প্রসঙ্গত, কলকাতা থেকে চারটি বাসে করে রামপুরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন প্রায় ৫০ জন বিজেপি বিধায়ক। পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে বিখ্যাত ল্যাংচার দোকানের সামনে বাস থামান বিজেপি বিধায়করা । তারপর তৃপ্তি করে ল্যাংচা খেতে দেখা যায় তাঁদের। সেই দলে ছিলেন বাঁকুড়ার বিধায়ক নিলাদ্রীশেখর দানা থেকে ,হবিবপুরের জুয়েল মুর্মু প্রমুখ। সেই নিয়েই কটাক্ষ করেন তৃণমূলনেত্রী।