উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, আশাবুল হোসেন, কলকাতা : পঞ্চায়েত ভোটের ( Panchayat Poll ) আগে তৃণমূল বিরোধী সব শক্তি কি এক জায়গায় আসছে? রাজ্য রাজনীতিতে কি তলে তলে তৈরি হচ্ছে নতুন সমীকরণ? সাগরদিঘিতে ( Sagardighi ) বাম-সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের বিপুল জয়ের পর এই জল্পনার পালে হাওয়া লেগেছে। আর, তাতে ইন্ধন দিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ( Adhir Chowdhury ) । এরপর বৃহস্পতিবার ফের শুভেন্দু অধিকারীর ( Suvendu Adhikari ) মুখে শোনা গেল জোটের কথা। এদিন তিনি বলেন, নীতিগতভাবে কংগ্রেস এবং বামেদের সঙ্গে আমাদের কোনও ভাবেই জোট হওয়া সম্ভব না। কিন্তু, আমরা না চাইলেও, নিচু তলার মানুষ তারা কিন্তু তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। 


সাগরদিঘিতে বাম-সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীর জয়ের পর অধীর চৌধুরী বলেছিলেন , ' তৃণমূলকে উৎখাত করতে হলে, বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।' 


আরও পড়ুন :


 ধর্মঘটে সামিল হলে কর্মজীবন থেকে বাদ যাবে একদিন, নির্দেশিকা জারি করল নবান্ন


২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে সাগরদিঘিতে তৃণমূল প্রার্থী ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিলেন, সেখানে এবার উপনির্বাচনে তারা ২৩ হাজারের কিছু বেশি ভোটে পরাস্ত হয়। এরপরই, ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ' এই যে সরকার যেভাবে ব্যবহার করছে বিরোধীদের সঙ্গে, এর বিরুদ্ধে লড়তে গেলে এক হওয়ার দরকার আছে। আমার মনে হয়, সেটা অনেকটা সাগদিঘিতে সফল হয়েছে। ' 


সেদিনই শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'দিলীপদা খারাপ কিছু বলেননি। আমাদের সিনিয়র লিডার। মানুষ চাইছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়ুক। আমাদের কখনওই আদর্শগতভাবে, তেল আর জল তো মিলবে না। তাই একসঙ্গে বিরোধীদের একসঙ্গে পতাকা বেঁধে আন্দোলনটা সম্ভব নয়। কিন্তু আমাদের সকলের উচিত নো ভোট টু মমতা বলা। মানুষই ঠিক করে দেবে তারা বিজেপি কে আনবে না অন্য কাউকে।

তবে এ সম্ভাবনা উড়িয়েই দিলেন মহম্মদ সেলিম । তাঁর মন্তব্য, ' বিজেপি বাঁচবে না। বাঁচার জন্য আক্সিজেন চাইছে। আর অক্সিজেন বিরোধীদের থেকে চাইছে। তার মানে বিজেপি নিজে বিরোধী নয়।' একই মত অধীর চৌধুরীর। বললেন, ' পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অস্তিত্ব শেষ, তাই এসব কথা বলছে। ' 

দিলীপ ঘোষ, শুভেনদু অধিকারীরা যেদিন বিরোধী মহাজোটের ডাক দিয়েছেন, সেদিনই বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন,' 
একটা নির্বাচন নিয়ে আঙুল তুলবেন না। সব মুখোশ খুলে গেছে। বিজেপি সিপিএম কংগ্রেস সব এক হয়ে গেছে। লড়ে যাবে একটাই দল তার নাম তৃণমূল কংগ্রেস।' 


বৃহস্পতিবার, ফের একবার জনগণের জোট-তত্ত্বের কথা উঠে এসেছে শুভেন্দু অধিকারীর মুখে।তিনি বলেন, ' যে যেখানে শক্তিশালী যারা তৃণমূলকে হারাতে পারবে তাদেরকেই ভোট দেবেন মানুষ। একমাত্র আমরা কখনোই ক্ষমতার অলিন্দে ছিলাম না, তাই মানুষ আমাদেরকেই ভোট দেবেন।'


পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি তৃণমূল। এদিন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, তৃণমূল একাই একশো, ওদের ক্ষমতা নেই বলে জোট করছে।


মহারাষ্ট্রে শিবসেনার মতো বিজেপির একদা জোটসঙ্গীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার তৈরি করেছিল কংগ্রেস। এরাজ্য়ে কি সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে? জানে যাবে ভবিষ্যতে।