কলকাতা: রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের দরবারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ‘মা ক্যান্টিন ও ক্লাবগুলিকে অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনীতি হয়েছে। সাধারণ মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে’, এমনই অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর। ‘দুর্নীতি’র তদন্ত চেয়ে রাজ্যপালের কাছে আবেদন জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ট্যুইট করে শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠকের কথা নিজেই জানালেন রাজ্যপাল।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের সঙ্গে নানা ইস্যুতেই রাজ্যপালের সংঘাত চলছে। এরইমধ্যে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সংক্রান্ত বিরোধী দলনেতার অভিযোগ নিজেই ট্যুইট করে জানিয়েছেন রাজ্যপাল।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরেই ‘মা ক্যান্টিনে’ ( Maa Canteen) বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Governor Jagdeep Dhankar)। তিনি তাঁর প্রশ্নের জবাব চেয়ে অর্থ দফতরের প্রধান সচিবকে চিঠি লিখেছিলেন। ‘১ এপ্রিল, ২০২১ থেকে প্রকল্প চালু হওয়ার কথা। প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ১০০ কোটি টাকা। কিন্তু দেড় মাস আগে থেকেই কীভাবে চালু হল প্রকল্প? ‘মেয়াদের আগে প্রকল্প শুরুর টাকা কীভাবে বরাদ্দ হল?’ জানতে চেয়ে অর্থ দফতরের প্রধান সচিবকে চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল।এক সপ্তাহের মধ্যে জবাব তলব করেছিলেন রাজ্যপাল।এ ব্যাপারে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছিলেন, রাজ্য সরকার একমাত্র দায়বদ্ধ বিধানসভার কাছে। সেখানেই যা জবাব দেওয়ার তা দেওয়া হবে। রাজ্যপাল অবান্তর কথাবার্তা বলছেন।
৭ জানুয়ারি নেতাই যাওয়ার পথে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। কেন এমনটা ঘটল, তার ব্যাখ্যা চেয়ে, এদিন রাজ্যের মুখ্যসচিবকে এক সপ্তাহের সময় বেঁধে দিলেন জগদীপ ধনকড়।পাল্টা রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলল শাসক শিবির।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা, আইএএস অ্যাসোসিয়েশন ও রাজ্য পুলিশকে ট্যাগ করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ট্যুইটারে লেখেন,বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নেতাইয়ের শহিদ দিবসে কেন সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি? সেই ব্যাপারে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেছি। বিরোধী দলনেতার সঙ্গে পুলিশের এই আচরণ, আসলে আইনের শাসনের বদলে শাসকের আইনের প্রতিফলন। যা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়।প্রত্যাশিতভাবেই রাজ্যপালের এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করেছে বিজেপি।পাল্টা সুর চড়িয়েছে তৃণমূলও।পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন, রাজ্যপাল এই ধরনের কথা কী করে বলেন? তাঁকে তো বুঝতে হবে, তিনি এই রাজ্যের রাজ্যপাল, প্রশাসনকে যদি কিছু আঘাত করতে হয়, তাহলে সেই আঘাত নিজের কাছেই আসে, একজন নেতাকে লক্ষ্য করে অথবা একটা দলের কোনও নেতৃত্বকে সামনে রেখে তিনি যে ডাকাডাকি করেন, সেটা তাঁর এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না, তিনি এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ সবসময় করে থাকেন, সবাই দেখেছে, তাঁর উচিত, সংবিধান অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার পরামর্শ করে তাঁর চলা উচিত, ওনার কথায় সরকার চলবে, সেই দায়িত্ব সংবিধান দেয়নি।
৭ জানুয়ারি পুলিশের বিরুদ্ধে নেতাই যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে রাজ্যপালকে নালিশ জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।