কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে (SSC Recruitment Scam) নাম জড়িয়েছে দুই মন্ত্রীর। তা নিয়ে লাগাতার আক্রমণ শানিয়ে চলেছে বিরোধীরা। তার মধ্যেই শাসকদল তৃণমূলকে (TMC) আরও বিঁধলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে (Paresh Adhikary) সরাসরি নিশানা করেছেন তিনি। মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী (Ankita Adhikary) ছাড়াও পরেশের আত্মীয়-পরিজনের মোট ৩২ জনকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে প্রকারান্তরে তুলেছেন তিনি, যার মধ্যে বেশ কয়েক জনের নামের তালিকাও নেটমাধ্যমে তুলে ধরেছেন শুভেন্দু।
পরেশের পরিবার-পরিজনদের চাকরি করে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ শুভেন্দুর
শনিবার নিজের টুইটার হ্যান্ডলে সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত পরেশের পরিবার, আত্মীয়-স্বজনদের কিছু নাম তুলে ধরেন শুভেন্দু। সেই তালিকায় নাম রয়েছে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী, মেয়ে, ছেলে, ভাই, ভাইপো, শ্যালক, শ্যালিকার। রয়েছে পরেশের একের পর এক আত্মীয়ের নাম।
নামের পাশে কার, কোন দফতরে চাকরি, তা-ও নেটমাধ্যমে প্রকাশিত তালিকায় উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু। এ ব্যাপারে অবশ্য এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি পরেশ অধিকারীর। তবে শুভেন্দুকে এ নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
শুভেন্দুকে জবাব দিতে গিয়ে কুণাল বলেন, "পরেশ অধিকারী দীর্ঘদিন বামফ্রন্টের মন্ত্রী ছিলেন। সিপিএম-এম শরিক দল ফরোয়ার্ড ব্লকে ছিলেন দীর্ঘ দিন। চাকরিগুলি কবে কোন জমানায় হয়েছে, তার তারিখ দিয়ে দিলে আরও সুবিধা হত। দুম করে তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলে দিলাম, এটা হতে পারে না।"
অধিকারী পরিবারের কে, কত সুবিধা নিয়েেছেন, তা প্রকাশ করার পাল্টা আর্জি কুণালের
শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অধিকারী পরিবারের কত জন পদ বাগিয়েছিলেন, শুভেন্দু নিজে কাকে কাকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন, তারও পৃথক তালিকা দাবি করেন কুণাল। তিনি বলেন, "শুভেন্দু অধিকারী আর একটা তালিকা দিলেও দিলে ভাল হত, তৃণমূলের কর্মীদের আবেগ এবং শহিদদের রক্ত ব্যবহার করে তাঁর পরিবারের কে কে, কত রকম পদে ছিলেন। তার তালিকাও দিন! তিনি নিজে কখন, কাকে চাকরি দিয়েছেন, প্রকাশ করুন! সস্তার টুইট করে বাকি প্রশ্ন এড়িয়ে যাবেন, তা হতে পারে না।"
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। প্রভাব খাটিয়ে বেআইনি ভাবে বহুজনকে চাকরি করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। রাজ্যের বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশের নামও উঠে এসেছে। তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা মেধাতালিকার নীচে থাকলেও 'মন্ত্রবলে' এক নম্বরে উঠে আসেন এবং স্কুল শিক্ষিকার চাকরি পেয়ে যান কিনা, প্রশ্ন তোলেন আন্দোলনকারীরা। সেই মামলায় সম্প্রতি অঙ্কিতাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয় আদালত। যার পর চাকরি থেকে তাঁকে সরিয়ে বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়। চাকরিরত অবস্থায় যত বেতন পেয়েছিলেন, ফেরত দিতে বলা হয়েছে তা-ও।