কোচবিহার: ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে, ফলে এই সরকার থাকার কথা ২০২৬ সাল পর্যন্ত। কিন্তু নির্বাচিত সরকারের স্থায়িত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক।
কী বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী:
সোমবার কোচবিহারে সভা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেখানে বক্তব্য রাখার সময় তিনি বলেন, '২০২৬ পর্যন্ত যেতে হবে না, ২০২৪-এই বিসর্জন দিয়ে দেব। অপেক্ষা করে থাকুন ২০২৪-এই সরকারকে বিসর্জন দিয়ে দেব।' এরপরেই মহারাষ্ট্র অনুষঙ্গ নিয়ে আসেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, 'সবে তো মহারাষ্ট্র হয়েছে, এরপর ঝাড়খণ্ড, তারপরে রাজস্থান (Rajasthan)। মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থানের পর বাংলায় পৌঁছে যাব।' কোচবিহারের সভা থেকে এভাবেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। মোদি সরকারের ৮ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ কোচবিহারে সভা করে বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে সভা হয়েছে।
বেশ কয়েকদিন ধরে ক্রমশ টালমাটাল হচ্ছে মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) পরিস্থিতি। শিবসেনার (Shiv Sena) অন্তর্দ্বন্দ্বে সেখানকার সরকার ঠিকে থাকবে কিনা সেই প্রশ্নই এখন ঘোরাফেরা করছে রাজনৈতিক মহলে। সেখানে এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়েছে একদা এনডিএ-শরিক শিবসেনা। সেখানেই এবার উদ্ধব ঠাকরের বিরুদ্ধে মাথাচাড়া দিয়েছেন একনাথ শিন্ডে। তাঁর নেতৃত্বে একাধিক শিবসেনা বিধায়ক ঠাকরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ভেঙে বেরিয়ে আসার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। আপাতত বিদ্রোহী বিধায়কদের নিয়ে অসমের (Assam) গুয়াহাটিতে রয়েছেন শিন্ডে গোষ্ঠীর বিধায়করা। শিন্ডে-গোষ্ঠীর বিধায়করা সমর্থন তুলে নিলে মহারাষ্ট্রে জোট সরকার পড়ে যাবে কিনা সেই প্রশ্ন এখন ঘুরছে। এই ঘটনায় উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী আঙুল তুলেছে বিজেপির দিকে। বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বের অঙ্গুলিহেলনে একনাথ শিন্ডে এই কাজ করছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে উদ্ধব ঠাকরের ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় রাউতকে একটি মামলায় তলব করেছে ইডি। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দুর বক্তব্য বিরোধীদের অভিযোগকে আরও ইন্ধন দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
মহারাষ্ট্রে বিজেপি বিরোধী শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপির জোট সরকার রয়েছে। ঝাড়খণ্ডে এখন মসনদে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ও কংগ্রেসের জোট, রাজস্থানেও রয়েছে কংগ্রেস সরকার। পশ্চিমবঙ্গেও রয়েছে বিজেপি-বিরোধী তৃণমূল সরকার। যেসব রাজ্যে বিরোধী দলের সরকার রয়েছে, সেখানেই সরকার ভাঙার ইঙ্গিত করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
এর আগেও এমন ঘটনা:
বিজেপি বিরোধী দলের তৈরি সরকার ভেঙে যাওয়ার নজির অবশ্য নতুন নয়। এর আগে কর্নাটকে বিরোধী দলের সরকার ভেঙে গিয়েছে, একই ঘটনা দেখা গিয়েছে মধ্যপ্রদেশেও। সেখানেও কংগ্রেসকে ভাঙিয়ে সরকার ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। এবার মহারাষ্ট্রের টানাপড়েনেও বিরোধীদের অভিযোগের আঙুল বিজেপির দিকে। ঠিক এই আবহে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতার মুখে এমন কথায় শুরু হয়েছে বিতর্ক।
শুভেন্দু অধিকারী বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। তৃণমূল নেতাদের দাবি, যতই চেষ্টা করুক, সরকার ভাঙতে পারবে না বিজেপি।
আরও পড়ুন: 'ধান ফিরিয়ে দিলে এফআইআর করুন', কৃষকদের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর