কলকাতা: কালীগঞ্জ উপনির্বাচনের আগে বিজেপির হাতিয়ার কেষ্টর হুমকি-ফোন। IC-কে কদর্য ভাষায় হুমকির ঘটনায় এবার পথে নামছে বিজেপি। বোলপুর এবং কালীগঞ্জে 'নারী সম্মান' যাত্রার ডাক দেওয়া হয়েছে। রাজ্য জুড়ে আরও বেশ কয়েকটি নারী সম্মান যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে গেরুয়া শিবির।
বোলপুরের IC লিটন হালদারকে কুকথা কাণ্ডে বিতর্ক ছড়িয়েছে। রীতিমতো তাঁর মা-বউয়ের প্রসঙ্গ তুলে নোংরা কথা এবং গালিগালাজ দিতে শোনা যায় তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে। রীতিমতো বাছা বাছা শব্দ শোনা যায় অনুব্রত মণ্ডলের গলায়। এমন শব্দবন্ধ দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা ব্যবহার করেন যা সম্প্রচারেরও অযোগ্য। মহিলার অসম্মানের অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি। আগামী ১৯ জুন কালীগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনের আগেও প্রচারেও হাতিয়ার হতে চলেছে এই ইস্যু। এদিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "বোলপুরের IC-র মা এবং স্ত্রীকে যে ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে। অপমান করা হয়েছে। ৯ তারিখ বোলপুরের মানুষ পথে নামবে। আমরা ওখানে ওইদিন নারী সম্মান যাত্রা করছি।''
IC-কে ফোনে কুকথা সহ হুমকি দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। অনুব্রত মণ্ডলকে গত শনি ও রবিবার তলব করেছিল পুলিশ। কিন্তু, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সেখানে যাননি তিনি। অথচ, শনিবারই দিব্য়ি তৃণমূলের পার্টি অফিসে পৌঁছে গেছিলেন তিনি। ঘটনার ৭ দিন পর অবশেষে গতকাল বীরভূমের SDPO অফিসে হাজিরা দেন কেষ্ট। সেখানেও ছিল টানটান চিত্রনাট্য, কাক-পক্ষীতেও যাতে টের না পায়, তারজন্য কার্যত লুকিয়ে ঢোকেন পিছনের গেট দিয়ে। শুধু তাই নয়, হাজিরা দিতে গেলেন বোলপুরের এক ব্যবসায়ীর স্ত্রীর নামে থাকা একটি গাড়ি নিয়ে। এদিন দু'ঘণ্টা ধরে অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও, তাঁর মোবাইল ফোন জমা নেয়নি পুলিশ। আর হাজিরা দিয়ে বেরিয়েই, সোজা বোলপুরের তৃণমূল পার্টি অফিসে ঢুকে যান অনুব্রত মণ্ডল।
এদিকে অনুব্রতর কদর্য হুমকিকাণ্ডে, রাজ্য় পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। চিঠি পাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্য়ে তদন্ত কোথায় দাঁড়িয়ে এবং অ্য়াকশন টেকেন রিপোর্ট দিতে বলেছে কমিশন। এই চিঠিতে অত্য়ন্ত জাতীয় মহিলা কমিশনের তরফে কড়া ভাষায় লেখা হয়েছে--- "এই অডিও ক্লিপে অনুব্রত মণ্ডলকে IC-র মা এবং স্ত্রীর উদ্দেশে অশ্লীল, নোংরা, অপমানজনক ভাষা ব্য়বহার করতে শোনা গেছে। মহিলাদের, বিশেষত একজন সরকারি আধিকারিকের পরিবারের সদস্য়দের বিরুদ্ধে এধরনের হুমকি শুধু নৈতিক এবং সামাজিক অপমান নয়। ভারতীয় ন্য়ায় সংহিতার একাধিক ধারা অনুযায়ী গুরুতর ধর্তব্য়যোগ্য় অপরাধ।" পাশাপাশি চিঠিতে জাতীয় মহিলা কমিশনের তরফে লেখা হয়েছে--- "জনমানসে প্রবল ক্ষোভ তৈরি হওয়া সত্ত্বেও, এবিষয়ে রাজ্য় পুলিশের তরফে যে নিষ্ক্রিয়তা দেখা গেছে, তাতে কমিশন অত্য়ন্ত উদ্বিগ্ন। এধরনের নিষ্ক্রিয়তা শুধু অপরাধীদের উৎসাহিত করে না, পুলিশ বাহিনীর মনোবলকে তলানিতে পৌঁছে দেয় এবং পুলিশের নিরপেক্ষতা এবং তৎপরতা নিয়ে মানুষের ভরসার জায়গাটা নাড়িয়ে দেয়।"