শিবাশিস মৌলিক, সন্দীপ সরকার, কলকাতা: গার্ডেনরিচকাণ্ডের প্রতিবাদে মৌন মিছিল করলেন শুভেনদু অধিকারী। মিছিল থেকেই বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হুঁশিয়ারি দেন বিরোধী দলনেতা। অনুব্রত মণ্ডল, শেখ শাহাজাহানের মতোই ফিরহাদ হাকিমের অবস্থা হবে বলে হুঙ্কার শুভেন্দু অধিকারীর।
গার্ডেনরিচে বহুতল বিপর্যয়ে ১১ জনের মৃত্যুর প্রতিবাদে শুক্রবার মৌন মিছিল করলেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন তিনি বলেন,সব বেআইনি নির্মাণের খবর আমরা জানি। সব বেআইনি নির্মাণের ( Illegal Construction) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।' শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে মিছিল করে ঘটনাস্থলের কাছে যান বিজেপি নেতারা। সেখান থেকেই সোমবার ফের আসার বার্তা দেন বিরোধী দলনেতা।
বিপর্যয় স্থল থেকে বেরিয়ে এলাকার বিবেকানন্দ মূর্তিতে মাল্য দান করেন শুভেনদু অধিকারী।তোপ দেগে শুভেন্দু বলেন, 'অনুব্রত মণ্ডল, শেখ শাহজাহানদের যা হয়েছে সামস ইকবালেরও তাই হবে। ফিরহাদ হাকিমেরও তাই হবে।' আগেও গার্ডেনরিচে বহুতল-বিপর্যয়ের ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ও মেয়রকে আক্রমণ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। শুক্রবারও সেই ধারা বজায় রাখলেন তিনি।
গার্ডেনরিচকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১১ জন। বৃহস্পতিবার ধ্বংসসতূপের নীচ থেকে স্থানীয় বাসিন্দা শেরুর দেহ উদ্ধার।এই মৃত্যু মিছিল নিয়ে দড়িটানাটানি চলছেই। শুক্রবারও মেয়রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখা পুর ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ। ১৭ তারিখ মধ্যরাতে গার্ডেনরিচে ভেঙে পড়ে নির্মীয়মাণ বহুতল। ৪ দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হল আরও এক জনের দেহ। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কংক্রিটের চাঙড় সরিয়ে আব্দুল রউফ নিজামি ওরফে শেরুর দেহ উদ্ধার করা হয়। শেরুর দেহ উদ্ধারের পরে গার্ডেনরিচে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১ জন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বহুতল বিপর্যয়ে ধৃত প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিমের সহযোগী ছিলেন শেরু। ভেঙে পড়া বহুতলেও একসঙ্গে কাজ করছিলেন ওয়াসিম ও আব্দুল রউফ নিজামি। ভেঙে পড়ার সময় বহুতলেই ছিলেন শেরু। বৃহস্পতিবারই শেরুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন ফিরহাদ হাকিম। আব্দুল রউফ নিজামির দেহ উদ্ধারের পরে আর কেউ ধ্বংস্তূপের নীচে আটকে নেই বলে অনুমান কলকাতা পুরসভার উদ্ধারকারী দল ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর।
আরও পড়ুন, যতোই করো কান্নাকাটি, ধরা পড়েছে মাফলার, এবার যাবে হাওয়াই চটি : শুভেন্দু
অন্যদিকে, গার্ডেনরিচকাণ্ডে মৃত্যু মিছিলের দায় কার, এই নিয়ে বিতর্ক চলছেই। ঘটনার পরেই গার্ডেনরিচে গিয়ে কাউন্সিলরকে আড়াল করে সব দায় বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকদের ওপর চাপিয়েছিলেন মেয়র। বুধবার বিল্ডিং বিভাগের বৈঠকে ১৫ নম্বর বরোর এক সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে দাঁড় করিয়ে ধমকও দেন মেয়র। এরপরে থেকে মেয়রের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকদের একাংশ। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও মেয়রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়াররা। বিক্ষোভকারীদের দাবি গার্ডেনরিচ বিপর্যয়ের দায় নিতে হবে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডকেও।