ঝিলম করঞ্জাই, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে চমক (Gujarat Assembly Elections 2023)। মেহসানা-আনন্দে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের শরণার্থী সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। এই অবস্থায়, এ’রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের CAA’র জল্পনা উস্কে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। জবাব দিয়েছে তৃণমূল ও কংগ্রেস (TMC)।


পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জল্পনা উস্কে দিলেন শুভেন্দু!


ভোটমুখী গুজরাতে ‘নাগরিকত্ব’ নিয়ে বড়সড় রাজনৈতিক চাল দিল বিজেপি। আর তার প্রভাব এসে পড়ল বাংলায়? ফের উঠে গেল সেই প্রশ্ন, বাংলায় কবে চালু হবে CAA? 


সামনেই গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ক্ষমতা ধরে রাখতে জোর ব্যস্ত নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহরা। এরই মধ্যে ব্রিজ ভেঙে পড়ায় অস্বস্তিতে প্রায় তিন দশক ধরে গুজরাতে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি। 


আর এই আবহেই নতুন চমক মোদি সরকারের। বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান, এই তিন দেশ থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী, যাঁরা মেহসানা এবং আনন্দ-এই দু'টি জেলায় বসবাস করছেন, তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মোদি সরকার।


আরও পড়ুন: Gujarat Assembly Elections 2022: মোরবি বিপর্যয়ে নয়া তাস মোদি-শাহের! পড়শি দেশের অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা


কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, মোদি সরকারের আমলে তৈরি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা CAA’তে নয়, ১৯৫৫-এর নাগরিকত্ব আইনের আওতায় এই নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ, CAA তৈরি হলেও, আজ অবধি আইন প্রণয়নই হয়নি। ফলে CAA কার্যকরও করা যায়নি। কিন্তু এই CAA-কে হাতিয়ার করেই লোকসভা থেকে বিধানসভা ভোট, পশ্চিমবঙ্গে বারবার ডিভিডেন্ট তুলেছে বিজেপি। মতুয়ারা ঢালাও ভোট দিয়েছে তাদের। 


কিন্তু তারপরও সিএএ এখনও কার্যকর না হওয়ায়, বারবার বিজেপি-কে এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। আর এবার ভোটমুখী গুজরাতে কেন্দ্রের নাগরিকত্ব প্রদানের পর এ রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের CAA জল্পনা উস্কে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, "এক যাত্রায় তো পৃথক ফল হয় না। গুজরাতে যখন কার্যকর হয়েছে, নিশ্চই রুল ফ্রেম করে ফেলেছে ভারত সরকার, আইন তো আগেই হয়ে গিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গেও চালু হয়ে গেল।"


নির্বাচনী চমক নাকি পাকা সিদ্ধান্ত!


কিন্তু এ নিয়ে কার্যত ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে বিজেপিরই মতুয়া সম্প্রদায়ের বিধায়কের গলায়। হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার বলেন, "১৯৫৫ সালে পেলে পাক। কিন্তু সিএএ এখনও রুম ফ্রেম হয়নি। কবে হবে? ১৯৫৫ সালের দিতে হলে, এখন সিএএ কী দরকার ছিল?" এ নিয়ে বিজেপি-কে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। ভোট এলেই বিজেপি সিএএ দেখায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীও। তাঁর কথায়, "এই জিনিসই হয়েছিল ২০২১-এ, CAA, NRC নিয়ে এল, ভোট হয়ে গেল মোদি-দিদির লাভের গল্প হয়ে গেল আমরা হেরে গেলাম, আবার ২০২৪- CAA উঠবে বাংলায়।"