কলকাতা : সোমবার রাজ্য বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার এক বছর। সঙ্গে বিধানসভায় তৃণমূলের জয়ের হ্যাটট্রিকেরও এক বছর পূর্তি। আর সেদিনই রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা ও গণতন্ত্র বাঁচাওয়ের ডাক দিয়ে পথে নামছে বিজেপি! সোমবার কলকাতায় মহামিছিল করবে বঙ্গ বিজেপি। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে - গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংকল্প মিছিল।


বিজেপির মহামিছিলের নেতৃত্বে থাকবেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরা। সূত্রের খবর, কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে বঙ্গ বিজেপি।


সোমবার, রাজ্যে তৃতীয় তৃণমূল সরকারের বর্ষপূর্তি। এই রাজ্যে হিংসার ঘটনার উল্লেখ করে ট্যুইট করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি লেখেন, ' বহু বিজেপি কর্মী ও তাঁদের পরিবার বিধানসভা নির্বাচনের ফলঘোষণার দিন থেকে  রাজ্যে লাগাতার হিংসার শিকার হয়েছেন। '  ট্যুইটারে তাঁর অভিযোগ, ' মহিলাদের ধর্ষণ ও ও নিগ্রহ করা হয়েছে। বাড়ি ঘর পোড়ানো হয়েছে। খুন হয়েছেন অনেকে। লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ বাঁচাতে পালিয়েছেন। ' 






ফেসবুকে তিনি লেখেন, ' গত বছর আজকের অভিশপ্ত দিনে, পশ্চিমবঙ্গে শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার "দোষে" সাধারণ ভোটার, বিরোধী দলের বিশেষত বিজেপি কর্মী সমর্থক, তাদের পরিবারবর্গের ওপর নেমে আসে শাসক তৃণমূল দলের পোষ্য গুন্ডাদের ভয়ংকর পাশবিক খাঁড়া। অমানুষিক নির্যাতনের নজির সৃষ্টি হয় বাংলায়। ভোট পরবর্তী হিংসায় এমন পরিবেশ তৈরি করা হয় সরকারি ব্যবস্থাপনায়, যেখানে আইনের রক্ষকরা পাকাপোক্ত হিংসার রোডম্যাপ তৈরি করে দেয়, কিভাবে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী সমর্থকদের ভীত ও সন্ত্রস্ত করে দেওয়া যায় চিরতরে, যাতে ভবিষ্যতে শাসক তৃণমূল দল কোনো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন না হয়। এক শ্রেণীর সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের তাতিয়ে দিয়ে পাগলা কুকুরের মতো লেলিয়ে দেওয়া হয়। মহিলারা ধর্ষিত হন, ঘরদোর ভেঙে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, দোকানপাট বিষয় সম্পত্তি লুটপাট হয়, নির্বিচারে খুন করা হয় বিজেপি কর্মীদের সমর্থকদের। লক্ষাধিক লোক নিজের দেশে উদ্বাস্তু হয়ে যায়। প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয় পার্শ্ববর্তী রাজ্যে। বিশেষ ভাবে আক্রান্ত হন সনাতনীরা। সেই হিংসা এখনও অব্যাহত, রাজ্য এখন নৈরাজ্যে পরিণত। এক বছরেও সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে ব্যার্থ। বিগত এক বছরে পশ্চিমবঙ্গ দুষ্কৃতকারীদের বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। '


সোমবার, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন,  গতবছর বিধানসভা নির্বাচনের পর যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তা রাজ্যের গণতন্ত্রের ইতিহাসে কলঙ্ক। এক বছর আগে কী হয়েছিল, তা মানুষকে তাঁরা ভুলতে দেবেন না। আজ কাশীপুর সর্বমঙ্গলা ঘাটে গঙ্গায় তর্পণ করেন দিলীপ ঘোষ। 


একের পর এক ইস্যুতে বিব্রত রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বেজে যাবে। তার আগে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে টানা ১৫ দিনের রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। সেই রণকৌশল অনুযায়ী, কলকাতার পরে আগামী ৫ মে শিলিগুড়িতে বিজেপির সমাবেশ। শিলিগুড়ির রেলওয়ে ইনস্টিটিউট ময়দানে হবে সেই সভা। প্রধান বক্তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।