কলকাতা : আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের মামলায় মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি। সেদিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ। তার আগে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে অবশেষে বসলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তঁদের ৫ দফা দাবি নিয়ে হল আলোচনা। মেনেও নেওয়া হল সিংহ-ভাগ। তবে মুখের আশ্বাসে নয়, কাজে করে দেখালে তবেই কর্মবিরতি তোলা নিয়ে ভাবনাচিন্তা, স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা। এরই মধ্যে ডাক্তারদের এই বৈঠক নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি আশঙ্কা করছেন, অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে ! 


এক্স প্ল্যাটফর্মে করা শুভেন্দুর ট্যুইটে বলা হয়েছে, বৈঠকের কার্যবিবরণী প্রস্তাব পড়ে মনে হচ্ছে যে অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে। যাইহোক, ন্যায়বিচারের জন্য, শুধুমাত্র কয়েকজন কর্মকর্তার বদলি যথেষ্ট হবে না। সাক্ষ্য বিকৃতিতে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, তাদের জেলে ঢোকাতে হবে। অন্যায় ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের পর যা কিছু করা হয়েছে, তা শুধুমাত্র  কয়েকজন আধিকারিকের কাজ হতে পারে না। সকলেই জানেন, পশ্চিমবঙ্গে, একটি পিন বা হাতি সরানোর জন্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদেশ/নির্দেশ এবং সম্মতি লাগে। তাই এই পুরো পরিস্থিতির জন্য স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত দায়ী। তার শুধু পদত্যাগই নয়, পুরো বিষয়টিতে তার ভূমিকার সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত। আমি সকল সরকারি কর্মচারীদের এই অধ্যায় থেকে পাঠ নিতে অনুরোধ করব। যখন সময় আসবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে বাঁচানোর জন্য আপনাকে বলি কা বখরা করে দেবেন।  সুতরাং, আইনের বিধান এবং আমাদের সংবিধান অনুসারে কাজ করুন। আপনার দায়িত্ব পালন করুন। অন্যথায়, পরের বার আপনি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন এবং সমস্ত দোষ আপনার কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হবে। আপনাকে বলির পাঁঠা বানানো হবে।


যাঁরা রাজ্য জুড়ে, দেশ জুড়ে এবং বিশ্বজুড়ে "উই ওয়ান্ট জাস্টিস" এবং "জাস্টিস ফর আরজি কর" স্লোগান তুলেছেন তাঁরা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের রায়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করবেন, কারণ এটিই আশা এবং ন্যায়বিচারের শেষ অবলম্বন। আমি সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই বিজেপি বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালাবে।  


মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর-মামলার শুনানির আগের দিন মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে  ৫ ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয় জুনিয়র ডাক্তার ও মুখ্যমন্ত্রীর।  সেখানে অধিকাংশ দাবি মেনে নেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। তবে এখনই কর্মবিরতি তুলে নিচ্ছেন না আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। এই আশ্বাাস কার্যকরী হলে তবেই কাজে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। সোমবার সন্ধের ম্য়ারাথন বৈঠকের পর, আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, স্বাস্থ্য অধিকর্তা দেবাশিস হালদার ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েককে সরানোর কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সরানো হবে DC নর্থ অভিষেক গুপ্তকেও। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, মৌখিক আশ্বাস মিলেছে, তা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়া হবে। 


 






আরও পড়ুন:  'স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে সরানোর সিদ্ধান্ত', জানালেন মমতা


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে