নদীয়া: একটা মৃত্যুতে তোলপাড় শহর থেকে গ্রাম। রাস্তায় নেমেছেন কাতারে কাতারে মানুষ। সকলেরই প্রশ্ন, কার গাফিলতির জেরে প্রাণ গেল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার? তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক দোষারোপ। এর মধ্যে এদিন, নদিয়ায়, মৃত পড়ুয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আজ দুপুরে বিজেপির প্রতিনিধিদল ওই ছাত্রের মা-বাবার সঙ্গে দেখা করে কথা বলে। পরে বেরিয়ে এসে শুভেন্দু বলেন, 'আমি ওঁদের বলেছি, এই বিষয়ে সুবিচার পেতে চাইলে আপনাদের আদালতের হস্তক্ষেপে আর্জি জানানো উচিত।'
আর কী বললেন?
বিরোধী দলনেতার মতে, 'এখন হাওয়া গরম, সরকার চাপে রয়েছে। তাই ৮-৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু এরা কারও বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়বে না।' তাঁর আরও আশঙ্কা, ''ট্রায়াল কোর্টে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে বিচার পাওয়ার সম্ভাবনাও কম।' সব মিলিয়ে তিনি যে ন্যায়বিচার নিয়ে সন্দিহান, সেটা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দেন বিরোধী দলনেতা। তাই পুত্রহারা মা-বাবাকে তাঁর পরামর্শ, যেন বিষয়টিতে আদালতের হস্তক্ষেপের আবেদন জানান তাঁরা।
অন্য দিকে, গোটা ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর প্রশ্ন, 'যদি একাংশ ছাত্র ইউনিয়ন বা ছেলেমেয়েরা উশৃঙ্খল আচরণ করে, তা হলে কেন তাঁদের চাপের মুখে নতিস্বীকার করা হবে?'
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য...
ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় আগেই যাদবপুরকে 'আতঙ্কপুর' বলেছেন তৃণমূলনেত্রী তথা রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য ছিল, 'এরা মার্কসবাদী, কখনও বিজেপির সঙ্গে, কখনও কংগ্রেসের সঙ্গে ঘর করে। এরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরা লাগাতে দেয় না।' সঙ্গে আরও বলেন, 'মৃতেরবাবা আমার কাছে বিচার চেয়েছেন। অত্যাচার করে ছেলেটাকে উপর থেকে ছুড়ে ফেলে হয়েছে। যাদবপুর এখন আতঙ্কপুর।' তৃণমূলনেত্রীর কথায়, 'যাদবপুরে পড়াশোনা ভাল হতে পারে, কিন্তু পড়াশোনায় ভাল হলেই মানুষ হয় না। এই জন্যই আমি যাদবপুরে যেতে চাই না।' এই মন্তব্যের পাল্টাও এসেছে নানা মহল থেকে। বস্তুত, শিক্ষামহলের নানা অংশের জিজ্ঞাস্য, এই মুহূর্তে রাজনৈতিক তরজা নাকি ন্যায়বিচার ও Ragging বন্ধে তৎপরতা, কোনটা বেশি জরুরি? তীব্র চাপের মুখে গত কাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু জানান, রাত ৮টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত আইডি কার্ড ছাড়া ঢোকা যাবে না। কিন্তু যেই সিসি ক্যামেরা না থাকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছিল, সেই ক্যামেরা বসানো নিয়ে কতটা সদর্থক পথ দেখাতে পারল বিশ্ববিদ্যালয়? প্রশ্ন অনেক।
আরও পড়ুন:যাদবপুরকাণ্ডে আরও কয়েকজন পড়ুয়া-প্রাক্তনীর খোঁজ তদন্তে, কারা তাঁরা