কলকাতা: ‘নিঃশব্দে বিদ্যুতের মাসুল বাড়িয়েছে সিইএসসি (CESC)। কলকাতার (Kolkata) ৩২ লক্ষ গ্রাহককে জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি। ’সিইএসসি-র (CESC) বিরুদ্ধে গোপনে বিদ্যুতের মাসুল বৃদ্ধির অভিযোগ শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari)। রাজ্য সরকারকে নিশানা বিরোধী দলনেতার। বৃহস্পতিবার, (Thursday) বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ট্যুইটে লেখেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Cm Mamata Banerjee) সরকারের আশীর্বাদেই এই একচ্ছত্র মনোভাব। যেন ধরেই নিচ্ছে গ্রাহকরা মেনে নেবে।’
যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ সিইএসসি (CESC)। এ প্রসঙ্গে কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, তারা বিদ্যুতের মাসুল বাড়ায়নি। গত ৫ বছরে কোনওরকম দাম বাড়ানো হয়নি। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরি কমিশনের অনুমতি ছাড়া সিইএসসি কোনওরকম দাম বাড়ায় না। এবারে এমভিসিএ বা মান্থলি ভ্যারিয়েবল কস্ট অ্যাডজাস্টমেন্ট-এর চার্জ এনার্জি চার্জের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা ইলেকট্রিক বিল দেখলেই বোঝা যাবে। এই পরিবর্তন রেগুলেটরি কমিশনের নির্দেশের পরেই নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে সিইএসসি কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে পূর্ব ভারতের বড় অঞ্চল জুড়ে চলছে বিদ্যুত্ সঙ্কট ( power supply crisis ) দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে তাপদাহে পুড়ছে রাজ্যের পর রাজ্য। পঞ্জাব-হরিয়ানা থেকে দিল্লি-মধ্যপ্রদেশ, তাপপ্রবাহে বিধ্বস্ত জীবন। আর গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে বিদ্যুতের ব্যবহার। শহরাঞ্চলে এসি ও কুলারের ব্যবহারও বেড়েছে । এর ফলে এক লাফে অনেকটা বেড়েছে বিদ্যুত্-এর চাহিদা। কিন্তু ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে তাল রাখতে পারেনি ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহারের মতো রাজ্য।
শহর এবং গ্রামাঞ্চলে দেখা দিয়েছে তীব্র বিদ্যুত্ সঙ্কট। এই সব এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের অনেকটা উপরে। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন জানিয়েছেন, বিদ্যুত্-এর চাহিদা মেটাতে তিনি খোলা বাজার থেকে বিদ্যুত্ কিনতে আগ্রহী। তবে সেখানেও চাহিদা তুঙ্গে বলে জানিয়েছেন তিনি। শুধু ঝাড়খণ্ড নয়, অনেক রাজ্যই এই সমস্যায় ভুগছে বলে জানিয়েছেন সোরেন।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির কড়া সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘মারাত্মক বিদ্যুত্ সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশ। বহু রাজ্যে মানুষকে ৮ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা সইতে হচ্ছে। মজুত কয়লা কমে আসায় বিদ্যুত্-এর চাহিদা বাড়লে এই পরিস্থিতি হবে। মোদি সরকারকে আগেই এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। সমস্যা মোকাবিলার বদলে, তা অস্বীকার করেছিল সরকার। সত্য নিজে থেকেই কথা বলে।' ফেসবুকে এইভাবেই মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন রাহুল গাঁধী।
কংগ্রেস সাংসদ লিথেছেন, ‘১৬৫টির মধ্যে ১০৬টি কয়লা খনিতে মজুতের পরিমাণ (shortage of coal in thermal power ) ২৫ শতাংশে নেমেছে। মাত্র ২১.৫৫ মিলিয়ন টন কয়লা মজুত রয়েছে। প্রয়োজন ৬৬.৩২ মিলিয়ন টন কয়লা মজুত থাকা। গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্র, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাবের মতো রাজ্য বিদ্যুত্ সঙ্কটের মোকাবিলায় লড়ছে। বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি, ব্যবসা বন্ধের জের, অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে। এই সঙ্কটের জন্য দায়ী উদ্ধত এবং অপদার্থ মোদি সরকার’।