কলকাতা: হিন্দুদের ওপর লাগাতার আক্রমণ, নিপীড়ন। কোথাও হিন্দুদের বাড়ি ভাঙচুর, কোথাও সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়া চেষ্টা। আর মন্দিরের ওপর হামলার তো বিরাম নেই। এই এবিপি আনন্দর যুক্তি-তক্কো অনুষ্ঠানে স্বামী পরমাত্মানন্দ বলেন, "এটা ইসলামিক রাষ্ট্র ঘোষণা করার আগে গোপন এজেন্ডা। শুধু হিন্দু নয়. সংখ্যালঘুর উপর মাত্রই অত্যাচার করা হচ্ছে।''
হিংসাত্মক পরিবেশ থেকে, বাংলাদেশে মৌলবাদীদের অত্য়াচার থেকে বাঁচতে, এপারে পালিয়ে আসতে চাইছেন বহু হিন্দু শরণার্থী। কেউ কেউ মরিয়া হয়ে এসে, আর ফিরে যেতেও চাইছেন না ভিটেমাটির কাছে। প্রতিবেশী দেশেরে এই পরিস্থিতি প্রসঙ্গে স্বামী পরমাত্মানন্দ বললেন, "বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি এবং তার সাপেক্ষে ভারতে যে জটিলতা এই সব কিছু নেই আজ একটা অবাক পৃথিবীর সম্মুখীন হয়েছি। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। যতই শান্তির বাণী দিয়ে সেই সত্যকে তরল করার চেষ্টা হোক না কেন এটা সত্য নয়। হলফনামা দিয়ে হিন্দুদের বাধ্য করা হচ্ছে ইসলামে রূপান্তরিত করে দেওয়ার। যাতে ভবিষ্য়তে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে জবাবদিহি করতে হয়, তাহলে এটুকু দুর্বল যুক্তি দেওয়া যাবে, যে এঁরা নিজেদের ইচ্ছায় ইসলামে রূপান্তরিত হয়েছে। রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে মানুষের ধর্মকে পরিবর্তন করে দেওয়া এটা নিন্দনীয়। এটা উল্টো পথে চালিত করে দেওয়া যায় না। রাষ্ট্রের দায় আছে এতে। হিন্দুদের উপাসনাস্থল আক্রান্ত হচ্ছে। সেই সূত্র ধরে চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুকে যে হেনস্থা করা হচ্ছে, এগুলো আমরা অস্বীকার করব কীভাবে।''
ওপার বাংলার এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে তাঁর প্রশ্ন, "কেন সংখ্যলঘুর ধর্মের উপর এই লাগাতার অত্যাচার চলবে? যখনই বাংলাদেশে ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণ হয়েছে, তখনই রাজতন্ত্র ধর্মতন্ত্রের মুখোশে এসে একই কাজ করে গিয়েছে। এখানেই আপত্তি। শুধু ধর্মীয় স্থানে সীমাবদ্ধ নয়। সাধু-সন্ন্যাসীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। গ্রেফতার হচ্ছেন। চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভু দুবেলা ওষুধ, প্রসাদ পাচ্ছেন কিনা জানি না। আদৌ তিনি কোনও আইনি সাহায্য পাবেন কিনা জানি না। বেছে বেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ করা হচ্ছে। হিন্দু হওয়ার জন্য স্বেচ্ছাবসর নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এটা কি বর্বরতা নয়? শিক্ষকের কি কোনও জাত হয়? তাহলে কীসের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মৌলবাদ যখন মানুষকে পেয়ে বসে, তখন কিন্তু আমরা অন্য কিছু ভাবি না। ধর্মের নামে মোহ এসে যাঁরে ধরে, অন্ধ সে জন মারে আর শুধু মরে। এই অন্ধ মৌলবাদ আমরা দেখতে পাচ্ছি। ধর্ম তো শান্ত করবে। সবাই দেখছি, শুনছি জাতীয় সঙ্গীত পর্যন্ত বাতিল করে দিতে হবে। সেখানে নাকি বাংলাদেশের গৌরবের কথা কিছু নেই। যে জাতীয় সঙ্গীত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত। আসল কথা হল, যেন তেন উপায়ে হিন্দু বিদ্বেষ ছড়াতে হবে। বাংলাদেশের ভূমি থেকে উৎখাত করতে হবে।''
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: SSC Hearing: কারা বৈধ, কারা অবৈধ? উত্তর আজও অধরা, কী বলছেন SSC চাকরিপ্রার্থীরা?