সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ভিন রাজ্যের বাসিন্দা ১০ দিন ধরে ভর্তি NRS মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Medical College Hospital), অথচ তাঁর হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হচ্ছে না। রোগীর পরিবারের দাবি, স্বাস্থ্য সাথী (Swasthya Sathi) কার্ড না থাকায় মিলছে না সঠিক চিকিত্‍সা। রোগীর (Patient) পরিবার সুপারের কাছে আবেদন করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা।


স্বাস্থ্য সাথী কার্ড না থাকায় ভিন রাজ্যের বাসিন্দার সঠিক চিকিত্‍সা না পাওয়ার অভিযোগ। রোগীর পরিবারের দাবি, NRS মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গত ১০ দিন ধরে ভর্তি থাকলেও, পেসমেকার বসানো হচ্ছে না। হাসপাতালের সুপারের পাল্টা বক্তব্য, পদ্ধতিগত কারণেই কোনও সমস্যা হয়ে থাকতে পারে।



যাঁকে নিয়ে এই বিতর্ক, ৭০ বছরের সেই উগনি রবিদাস, ঝাড়খণ্ডের গিরিডির বাসিন্দা। তাঁর ছেলে কলকাতা পুরসভার কর্মী। গত ১০ জুন রাতে তাঁকে ভর্তি করা হয় NRS-এ। চিকিত্‍সকরা জানান, পেসমেকার বসাতে হবে। 


আরও পড়ুন, পূর্বাঞ্চলে ট্রেন চালাতে আগ্রহী নয় কোনও বেসরকারি সংস্থা! চিন্তায় রেল


রোগীর পরিবারের দাবি, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড বা অন্য কোনও স্বাস্থ্য বিমা নেই রোগীর। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতাল জানায়, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ছাড়া পেস মেকার বসানো যাবে না। রোগীর আত্মীয় বলেন, "তাহলে কি রোগী সরকারি হাসপাতালে চিকিত্‍সা পাবে না? সরকার কি সবই বিক্রি করে দিচ্ছে?" 


সূত্রের খবর, সরকারি হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন যে সব রোগীর স্বাস্থ্য সাথী কার্ড রয়েছে, তা জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। তবে যাঁদের কার্ড নেই, তাঁরাও নিখরচায় সরকারি হাসপাতালে চিকিত্‍সা পাবেন। 
সরকার ঘোষণা করেছিল, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড না থাকলে তা হাসপাতালে তৈরি করে দেওয়া হবে। যদিও সেই পরিষেবা এখনও প্রায় কোনও হাসপাতালেই শুরু হয়নি।  


ভিন রাজ্যের বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে নিয়মটা ঠিক কী, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও গাইড লাইন নেই। এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সুপার  ইন্দিরা দে পাল, "অন্য রাজ্যের মানুষরা এখানে বিনা পয়সায় চিকিত্‍সা পান। এমনকী বাংলাদেশের রোগীরাও পান।  তবে আমাকে বিশেষ অনুমতি নিতে হয়। স্বাস্থ্য ভবনও এই সংক্রান্ত ফাইল আটকায় না।  হয়ত প্রসেসিংয়ে কোথাও একটা আটকে রয়েছে। অথবা আর একটা কারণ হতে পারে, যত রোগী অপেক্ষায়, তার তুলনায় সরঞ্জাম কম।" 



স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানিয়েছেন, ভিন রাজ্যের বাসিন্দা স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নেই বলে, আমাদের রাজ্যে চিকিত্‍সা পাবেন না, বিষয়টা এমন নয়। বহু মানুষই এখানে চিকিত্‍সা পান। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। মায়ের পেস মেকার বসানোর জন্য গত ১৫ জুন হাসপাতাল সুপারের কাছে আবেদন করেছেন অশোক রবিদাস। এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মুখ চেয়ে ৭০ বছরের বৃদ্ধা।