সন্দীপ সরকার, কলকাতা: স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিত্সা পরিষেবা দেওয়ার পরেও, বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিল মেটাচ্ছে না রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে চিঠি দিল পূর্ব ভারতের বেসরকারি হাসপাতালের সংগঠন। দ্রুত বিল মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম।
এবার স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প ঘিরে অনিশ্চয়তার মেঘ। সূত্রের দাবি, শহরের ১৬টি বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী খাতে বকেয়া ১৩০ কোটি টাকা। সেই বিল এখনও মেটায়নি রাজ্য সরকার! বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্যসচিবকে কড়া চিঠি দিয়েছে পূর্ব ভারতের বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠন
তাতে হুঁশিয়ারি, এভাবে বিল বকেয়া থাকলে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রোগী ভর্তি করা কঠিন! জনসাধারণের সুবিধার জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করেছে সরকার। কোনও রোগের চিকিৎসায় ৫ লক্ষ টাকা অবধি ক্যাশলেস পরিষেবা পাওয়া যায় এই প্রকল্পে। সূত্রের দাবি, গত বছর নভেম্বরে, স্বাস্থ্যসাথী খাতে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে শেষবার বিল মিটিয়েছিল রাজ্য সরকার।
এই প্রসঙ্গ ধরেই গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে চিঠি দেয় অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। তাতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রোগীদের চিকিৎসার বিল সরকারের ঘরে আটকে আছে। বিলের টাকা পেতে দীর্ঘ সময় লাগছে। চিঠিতে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বেসরকারি হাসপাতালগুলি রোগীদের চিকিৎসার বিল জমা দেওয়ার ২০ দিনের মধ্যে খরচ মিটিয়ে দেওয়া বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। এদিকে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এই অবস্থায় বকেয়া বিল অবিলম্বে না মেটালে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রোগীকে ভর্তি নেওয়া কঠিন।
কলকাতার ১৬টি বেসরকারি হাসপাতালের তরফে স্বাস্থ্যসচিবকে পাঠানো এই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতির পরে চিকিৎসার খরচ অনেকাংশে বেড়েছে। তাই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসার খরচ পুনর্বিবেচনা করুক রাজ্য সরকার। না হলে, বর্তমান চিকিৎসার খরচে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পরিষেবা দেওয়া ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে।
চিঠিতে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, ৩ বছর আগে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসার খরচের পুনর্মূল্যায়ন করেছিল রাজ্য সরকার। ১৫ মাস আগে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসার খরচ বাড়ানো হয়। কিন্তু এখন ফের খরচের পুনর্মূল্যায়ন জরুরি। চিঠিতে সই করেছেন কলকাতার নামজাদা বেসরকারি হাসপাতালের আধিকারিকরা।
চিঠির বিষয়ে তাঁদের সংগঠনের বক্তব্য, কোটি কোটি টাকা বকেয়া রেখে সুষ্ঠু ও ভালো চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া কঠিন। চিকিৎসার সরঞ্জাম যাঁরা সরবরাহ করেন, তাঁদের কাছে আমাদেরই কোটি কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। তাঁরা সরঞ্জাম সরবরাহ করতে চাইছেন না। এমনিতেই স্বাস্থ্যসাথীতে চিকিৎসার খরচ কম। তারপরও এত টাকা বাকি থাকলে, চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়াই মুশকিল।
স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের আশ্বাস, সবার পেমেন্ট শীঘ্রই মিটিয়ে দেওয়া হবে। কোনও সমস্যা নেই। রাজ্য সরকার বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে। গোটা প্রক্রিয়ায় একটু দেরি হয়েছিল। আমরা এখন সময় মতো সমস্ত বিল মিটিয়ে দেব।