ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, রুমা পাল ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : সন্ধে হতেই শুরু হয় পুলিশের (Police) মাইকে প্রচার। বিশাল পুলিশবাহিনীতে ছয়লাপ হয়ে যায় করুণাময়ী চত্বর। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ বলবৎ করতে যে তারা পদক্ষেপ করতে চলেছেন, বুঝিয়ে বারবার নরমে-গরমে প্রচার চালানো হতে থাকে পুলিশের পক্ষ থেকে।
পুলিশের সংখ্যা বাড়ার মতোই একজোট হয়ে তীব্র প্রতিরোধের সুর আরও জোরালো করতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। একদৃষ্টে পুলিশের মাইকে প্রচার দেখা-শোনার পর আন্দোলন প্রত্যাহার হবে কি না জানতে চাইলে ১৪-র টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য, 'মারতে এল মার খাব। হয় পুলিশের মারে মরব, নয়তো না খেয়ে। তবে নিজেদের দাবি থেকে আমরা একচুলও নড়ব না। চাকরি না পেয়ে আমরা এক চুলও নড়ব না।' অপর এক চাকরিপ্রার্থীর কথায়, 'এতদিন ধরে ন্যায্য চাকরি পাওয়ার জন্য কিছু করতেই তো বাকি রাখিনি আমরা। সবটা দিয়ে লড়াই করার পরও সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে দেখেই তো এই চূড়ান্ত পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছি।'
অসুস্থ একের পর এক
করুণাময়ীতে টানা চারদিন ধরে চলছে ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান-ধর্না। যার মধ্যে টানা তিনদিন নির্জলা অনশন চলছে তাঁদের। গত দিন দুয়েকে একের পর এক চাকরিপ্রার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদিন সন্ধেতেও পুলিশি তৎপরতা বাড়ার পরও বেশ কয়েকজন শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করেন। তাঁদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আশা হলেও তাঁরা অনশন তুলে অবস্থান মঞ্চ ছেড়ে যেতে চাননি। যারপরই কড়া সুরে পুলিশ জানায়, শারীরিকভাবে কোনও কিছু হলে তাঁর জন্য কিন্তু তাঁরা দায়ী থাকবেন না। যারপরই আলোচনার মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে ফের আলোচনা করে অসুস্থদের বুঝিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে হাসপাতালে পাঠানোর দিকটা নিশ্চিত করেন।
কিন্তু পুলিশে পুলিশে করুণাময়ী ছয়লাপ হয়ে গেলেও আন্দোলন তুলে নিয়ে তাঁরা যে উঠে যাবেন না, সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন আন্দোলকারীরা। যার জেরে গোটা এলাকায় তৈরি হয়েছে টানটান উত্তেজনা।
হাইকোর্টের নির্দেশ
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কর্মীদের অফিসে ঢোকা-বেরোনো নিশ্চিত করতে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। গাড়ি নিয়ে পর্ষদের অফিস পর্যন্ত যাওয়ার আবেদনে অবশ্য হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্ট জানিয়ে দিল ‘বহাল থাকা ১৪৪ ধারা কার্যকর করতে পদক্ষেপ নিতে পারবে পুলিশ (Police) ’, ৪ নভেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে অন্তর্বর্তী নির্দেশ।