কলকাতা: ‘কোনও কিছু লুকোবো না, কোনও অস্বচ্ছতা থাকবে না। টেট হবে প্রতিবছর, প্রত্যেকের অভিযোগ শুনব’। দায়িত্ব নিয়েই স্বচ্ছতার আশ্বাস দিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নতুন সভাপতি গৌতম পাল। গতকালই দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। 


বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, 'আজ থেকে বোর্ডের সমস্ত কাজকর্মের মধ্যে স্বচ্ছতা থাকবে, কিছুই লুকোনো থাকবে না। বোর্ডের কোনও অস্পষ্টতা থাকলে সেটা দূর করার দায়িত্ব আমি নিলাম। যাঁরা টেট প্রার্থী, আগামী দিনে পরীক্ষা দেবেন, প্যানেল বেরোবেই সব স্বচ্ছতার সঙ্গে হবে'।


 



নিয়োগ দুর্নীতি মামলার মধ্যেই গতকাল প্রাথমিকে রদবদল হয়। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি হন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য। সরিয়ে দেওয়া হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সদস্যদের। সরকার তৈরি করে ১১ সদস্যের নতুন অ্যাডহক কমিটি। নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, অভীক মজুমদাররা  প্রাথমিকের পরিচালন ব্যবস্থায় আসেন।


টেট ( TET ) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যের, গতকাল তার জায়গাতেই বসানো হয় কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য গৌতম পালকে। গত ১০ অগাস্ট জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে ( Manik Bhattacharya ) ফের তলব করে ইডি।


সমস্ত নথি নিয়ে তাঁকে ইডি-র দফতরে আসতে বলা হয়। এর আগে গত ২৭ জুলাই টেট মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের ( ED) জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya )। তাঁকে সেদিন বেলা ১২টায় তলব করা হলেও তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছে যান সকাল ৯টা ৪৪ নাগাদ।  তারপর চলে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ। 


মানিক ভট্টাচার্যের বাড়ি থেকে কী পাওয়া গিয়েছিল
ইডি সূত্রে খবর,  মানিক ভট্টাচার্যের বাড়ি থেকে তল্লাশিতে মেলে একটি সিডি, যাতে ছিল সংশোধিত তালিকার ২৬৯ জনের নাম ও তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।  মানিক ভট্টাচার্যকে ওই সংশোধিত তালিকা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে ইডি সূত্রে খবর। সিজিও কমপ্লেক্সের ৬ নম্বর ঘরে মানিক ভট্টাচার্যকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। 


পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে অপসারণ
২০ জুন মানিক ভট্টাচার্যকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এই দুর্নীতির মামলায়, হাইকোর্টের নির্দেশেই সিবিআইয়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। টেট দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই ২৬৯ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। 


উল্লেখ্য, এর আগে হাওড়ার (Howrah) জগৎবল্লভপুরে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (Primary School) লক্ষ লক্ষ টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সভাপতি। প্রাক্তন সভাপতির সময়ে দুর্নীতি হয়েছে। দাবি বর্তমানের। প্রতিক্রিয়া মেলেনি প্রধান শিক্ষকের।তদন্ত কমিটি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন, জেলা স্কুল ইন্সপেক্টর। 


টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ


স্কুলের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে রাজ্য এখন তোলপাড়। তার মধ্যেই এবার হাওড়ার জগৎবল্লভপুরে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে লক্ষ লক্ষ টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠল প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে।বড়গাছিয়া ইউনিয়ন প্রিয়নাথ পাঠশালার গেটের সামনে পড়ল এমন পোস্টার। যেখানে লেখা, “স্কুলের সরকারি টাকা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার হল কেন? প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি জবাব দাও।’’