সুদীপ্ত আচার্য, কলকাতা: নিয়োগ চাই। আমরণ অনশনে অনড় ২০১৪’র TET উত্তীর্ণ নন ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীদের (Job Seekers Agitation) একাংশ। রাতভর কেউ বসে, আবার কেউ শুয়ে কাটাচ্ছেন রাজপথে। সল্টলেকের করুণাময়ীর সামনে চলছে অবস্থান।
আমরণ অনশনে অনড় চাকরিপ্রার্থী: সকাল থেকে সন্ধে। সন্ধে গড়িয়ে রাতে। যে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে স্কুলে কচিকাঁচাদের পড়াতে যাওয়ার কথা, ছিল সেই ব্যাগই এখন মাথার বালিশ। মাথার ওপর খোলা আকাশ। চোখে ঘুম নেই। রয়েছে স্বপ্ন ভঙ্গের আশঙ্কা। আর সেই আশঙ্কাকে কোনভাবেই সত্যি না হতে দেওয়ার জেদ নিয়ে এবং নিয়োগের দাবিতে এখনও আমরণ অনশনে ২০১৪’র TET উত্তীর্ণ নন ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা। নদিয়ার বীরনগরের রণজিৎ রায়। বাবা দিনমজুর। ছোটবেলা থেকেই রণজিতের স্বপ্ন শিক্ষক হওয়া। ২০১৪’র টেট পাস করেন। ইন্টারভিউও দেন। রণজিৎ রায়ের কথায়, “বাবা দিন মজুর, স্কুলে পড়ার সময় থেকেই শিক্ষকদের দেখে আমার শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন, ছোটবেলা থেকে দেখা সেই স্বপ্ন বাস্তবের কাছে হারিয়ে গেছে, দুর্নীতি আমাদের স্বপ্নকে গলা টিপে মেরেছে।’’
কী বলছেন চাকরিপ্রার্থীরা? এরকমই আরেকজন পীযূষ চট্টোপাধ্যায়। স্বপ্নেও ভাবেননি, শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন পুরণ করতে এভাবে রাস্তায় রাত কাটাতে হবে। পীযূষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যারা অবৈধভাবে চাকরি পেয়েছে তারা স্কুলে যাচ্ছে এবং খাট পালঙ্কে শুয়ে আছে আর আমাদের ভবিতব্য রাস্তায়, আমরা যদি ডেঙ্গি হয়ে মরে যাই তাহলে কোন সমস্যা নেই।’’ আরেক TET উত্তীর্ণ নন ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থী সঙ্গীতা সাহা বলেন, “আমরা জল স্পর্শ করছি না, শুধু আমরা না আমাদের বাবা-মা বাড়ির লোকরাও বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন এবং তারাও উপবাস করে রাত জাগছে। স্বপ্নেও ভাবিনি যে আমাদের হকের চাকরি পাবার জন্য এভাবে রাস্তায় থাকতে হবে, এটা আমাদের স্বপ্নের অতীত।’’
একে তো খাওয়া-দাওয়া নেই। তার মধ্যেই পালা করে রাত জাগছেন আন্দোলনকারীরা। আরেক আন্দোলনকারী মৌমিতা ঘোষ বলেন,”পুলিশ কি করে তাই জন্য জেগে থাকতে হচ্ছে পালা করে, কার কি সুবিধা অসুবিধা তাই দেখার জন্য রাত জাগছি। রাত জাগা, ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার ভয় কোন কষ্ট না; কষ্ট হচ্ছে বেকারত্বের।’’ নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
আরও পড়ুন: Madan vs Dilip:‘বুকে পা তোলার আগে গলায় পা পৌঁছে যাবে, আমরা তৃণমূল’ দিলীপের মন্তব্যের পাল্টা মদন