কলকাতা: বিজেপি (BJP) ছেড়ে তৃণমূলে (Trinamool Congress) যোগ দিয়েছেন সুমন কাঞ্জিলাল। কিন্তু, দলত্যাগ বিরোধী আইনের ভয়ে কি আলিপুরদুয়ারের বিধায়কের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেওয়া হয়নি? প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারীর কথা মনে করিয়ে দিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন কুণাল ঘোষ।


সুমন কাঞ্জিলালের ক্ষেত্রে নতুন কৌশল? পঞ্চায়েত ভোটের মুখে পদ্মশিবিরে ফের ধাক্কা দিয়েছে ঘাসফুল। রবিবার তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। ছবি পোস্ট করে, তৃণমূলের ট্যুইটার হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, বিজেপির জনবিরোধী নীতি এবং বিদ্বেষের এজেন্ডাকে প্রত্যাখ্যান করে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূল পরিবারে যোগ দিলেন সুমন কাঞ্জিলাল।

তবে, রবিবার সুমন কাঞ্জিলালের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেওয়া হয়নি। এর আগে বিশ্বজিৎ দাস, তন্ময় ঘোষ,  সৌমেন রায়, কৃষ্ণকল্যাণীদের ক্ষেত্রে, তৃণমূলের পতাকা তুলে দেওয়া হয়েছিল তাঁদের হাতে। এই প্রেক্ষাপটেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে ট্যুইটারের লিখেছেন, দলত্যাগ বিরোধী আইনকে ভয় পাচ্ছেন? তাই কি তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে দিলেন না? কারণ বিধানসভার ভিতরে মুকুল রায়ের গায়েও বিজেপির তকমা সাঁটিয়ে রেখেছেন তৃণমূলের মালিকরা। সুমন কাঞ্জিলালও দাবি করবেন যে তিনি বিজেপির সঙ্গেই আছেন।

পাল্টা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা, কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর প্রসঙ্গ টেনেছে তৃণমূল। যাঁকে অমিত শাহর মঞ্চে দেখা গেছিল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন. “স্বাগত জানানো অনেকভাবে জানানো যায়, মূল বার্তা দিতে অসুবিধা নেই, কাল পরশু পতাকা দেখবেন। যারা বিরোধিতা করছেন, সেই মেজ খোকা বাইরে জ্ঞান না দিয়ে, বাড়িতে বাবা ও ভাইকে বোঝান, তারা কেন এখনও দলবিরোধী আইন এড়িয়ে চলছেন।’’

বিজেপির টিকিটে জেতা কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়কে, ২০২১-এর ১১ জুলাই তৃণমূলভবনে, দলীয় নেত্রীর উপস্থিতিতে উত্তরীয় পরিয়ে দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই মুকুল রায়কে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করা নিয়ে, বঙ্গ রাজনীতিতে ঝড় বয়ে গেছিল। বিতর্কের জল গড়িয়েছিল বিধানসভা ও আদালত পর্যন্ত। সেকথা মাথায় রেখেই কি সুমন কাঞ্জিলালের ক্ষেত্রে নতুন কৌশল নিল তৃণমূল?

বিজেপি সূত্রে খবর,  ২ ফেব্রুয়ারি আলিপুরদুয়ারে দলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন সুমন কাঞ্জিলাল। পরের দিন ৩ তারিখ, বিধানসভায় এসে বিজেপি বিধায়কদের ঘরে দীর্ঘক্ষণ ছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, আগামী ৮ তারিখ ফের বিধানসভায় আসবেন। কিন্তু, তার আগে শিবিরই বদলে ফেললেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক। বিধানসভার মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, “ওনার যদি কিছু বলার থাকত, তাহলে বলতেই পারতেন, তা না করে দল বদলে অন্য জায়গায় চলে যাবেন, সেটা ভাবতে পারিনি, তবে বিজেপি ঠুনকো দল নয়, যে একজন চলে গেলে ভেঙে পড়বে।’’ দলত্যাগ প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক বলেন, “কাজ করা যাচ্ছিল না, গঠনমূলক বিরোধীতা ছিল না, টাকা আটকে দাও, বারবার বলেও কোনও লাভ হয়নি। এখন তৃণমূলে না গেলে, মানুষের দাবির কথা ভেবেই তৃণমূলে।’’ সূত্রের খবর, দলত্যাগ বিরোধী আইনে সুমন কাঞ্জিলালের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে, মঙ্গলবার বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে আর্জি জানাতে পারে বিজেপি।


আরও পড়ুন: Water Crisis: টিউবওয়েল থাকলেও তা অকোজো, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে জল সংগ্রহ পূর্ব বর্ধমানে