কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: ১০ ফুট নিচু খাল সংলগ্ন পাইপ থেকে সংগ্রহ করতে হচ্ছে পানীয় ও গৃহস্থালির কাজের জল। এমনই ছবি বর্ধমান পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের হারাধনপল্লির। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বারবার স্থানীয় কাউন্সিলর ও পুরসভাকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।


জীবন হাতে জল সংগ্রহ: ৩ জন মিলে তুলছে এক বালতি জল। তাও চূড়ান্ত বিপজ্জনকভাবে। এমনকি, মাঝেমাঝেই ঘটে যাচ্ছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এলাকায় টিউবওয়েল আছে ঠিকই, তবে তাতে জল পড়ে না। তাই এই ১০ ফুট নিচু খাল সংলগ্ন পাইপ থেকে জল তোলাই এখানকার বাসিন্দাদের দস্তুর। এটা কোনও প্রত্যন্ত গ্রাম বা খনি এলাকার ছবি ভাবলে, বড় ভুল হবে। এ ছবি বর্ধমান পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের হারাধনপল্লির। এই এলাকায় প্রায় ১৫০টি পরিবারের বসবাস। বাসিন্দার সংখ্যা কমবেশি ৭০০।

২ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ-এর ফলে মাটির নিচে থাকা পুরসভার পুরনো পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি কাজ চলছে নতুন লাইন পাতার। জল আসার সময় অল্প পরিমাণে জল আসছে ভেঙে যাওয়া পুরনো পাইপে। রাস্তা থেকে বেশ কিছুটা গভীরের নেমে সেই জলই সংগ্রহ করছেন বাসিন্দারা। ৩ মাস ধরে এমনই দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে। বারবার স্থানীয় কাউন্সিলর ও পুরসভাকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না বলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাসিন্দারা।


ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলছেন, “বাধ্য হয়ে ১০ ফুট নীচে খালে নেমে পানীয় জল ও গৃহস্থলির কাজের জন্য জল নিতে হচ্ছে।এলাকায় জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ-এর কাজ চলছে তারজন্য পাইপ ফেটে কলে জল পরছে না।এমনকি গত কয়েকদিন ধরে টিউবওয়েলগুলিও খারাপ হয়ে পরে আছে। বারংবার স্থানীয় নেতা থেকে কাউন্সিলার ও পৌরসভাকে জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি।’’

বাসিন্দাদের অভিযোগকে হাতিয়ার করে আসরে নেমেছে বিজেপি। সমস্যার কথা মেনে নিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর।  বর্ধমান জেলা যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক  সুধীররঞ্জন কুমার সাউ বলেন, “রাজ্যের এটাই দস্তুর, কল থাকলেও থাকে না জল আর স্কুল থাকলেও থাকে না শিক্ষক। কাউন্সিলর টাকা দিয়ে টিকিট নিয়েছেন, তাই এলাকায় সমস্যা তিনি কেন দেখবেন?’’ ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর নাড়ুগোপাল ভকত বলেন, “জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য এলাকায় কাজ চলছে তাই বিভিন্ন সময়ই কাজ করতে গিয়ে জলের পাইপলাইন কাটা পড়ায় এই সমস্যা হচ্ছে। ভাঙা টিউবওয়েলগুলির জন্য পুরসভাকে জানানো হয়েছে, আশাকরি দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে। বিজেপি হয়ত টাকা দিয়ে কাউন্সিলর হয়।’’


আরও পড়ুন: KMC News: কলকাতার 'গভীরতম' কুয়ো! খিদিরপুরে কাজ শুরু করল পুরসভা