অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও পূর্ণেন্দু সিংহ, কলকাতা ও বাঁকুড়া: নির্মীয়মাণ মণ্ডপ থেকেই কি বিপদ বাড়ছে? প্যান্ডেলের বাঁশে জমা জলে ডেঙ্গির লার্ভা জন্মাতে পারে। আশঙ্কা প্রকাশ করে নজরদারির নির্দেশ দিল স্বাস্থ্যদফতর। নোটিস পাঠানো হল পুরসভার সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
পুজোর মুখে ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গি। রাজ্যে ক্রমেই বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। উদ্বেগ বাড়াচ্ছে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ডেঙ্গি 3’। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শুধুমাত্র শুক্রবার ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬৬ জন। রাজ্যে চলতি বছরে মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য কর্তাদের আশঙ্কা, নভেম্বরের আগে ডেঙ্গি থেকে রেহাই মিলবে না। ডেঙ্গি পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে না যায়, শুরু থেকেই তাই মাঠে নেমেছে প্রশাসন। দফায় দফায় জরুরি বৈঠকে বসছে পুরসভা। বৈঠকে, নির্মীয়মাণ পুজো মণ্ডপগুলি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার।
নির্মীয়মাণ মণ্ডপগুলির জন্য ব্যবহৃত কাটা বাঁশের খাঁজে বৃষ্টির জল জমে ডেঙ্গির লার্ভা জন্মানোর আদর্শ পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। তারপরই তত্পর হয় প্রশাসন।পুরসভার সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নোটিস দিয়ে নির্মীয়মাণ মণ্ডপগুলিতে নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়।
রবিবার উল্টোডাঙার শুঁড়ির বাগান সর্বজনীনের পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে নিয়ে মণ্ডপ পরিদর্শন করেন বরো চেয়ারম্যান ও পুরকর্মীরা। বাঁশে জমে থাকা জলে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করা হয়।
কলকাতার পাশাপাশি, ডেঙ্গি চিন্তা বাড়াচ্ছে জেলাতেও। বাঁকুড়া পুর এলাকায় এ পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৭৫জন, তার মধ্যে শুধু ১৯ নম্বর ওয়ার্ডেই আক্রান্তের সংখ্যা ৬০।
রবিবার ৮ জন ডেঙ্গি আক্রান্তকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই অবস্থায় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্সকরা।
ডেঙ্গি প্রকোপ থেকে রেহাই কোন পথে ?
এই পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতিদিনই বৈঠক করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। শনিবারও স্বাস্থ্যভবনে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে যে সব নির্দেশ বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট, ডেঙ্গি প্রতিরোধে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে স্বাস্থ্যভবন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে বলা হয়েছে, ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া আক্রান্ত কেউ হাসপাতালে ভর্তি হলেই তা বাধ্যতামূলকভাবে জানাতে হবে স্বাস্থ্যভবনকে। স্বাস্থ্যভবনের ওয়েবসাইটে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা ও তথ্য আপলোড করতে হবে। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার উপসর্গ নিয়ে যে রোগীই হাসপাতালে আসবেন, তাঁর বাধ্যতামূলক এলাইজা পদ্ধতিতে NS-1 টেস্ট করাতে হবে। ডেঙ্গি আক্রান্তের চিকিত্সা করতে হবে স্বাস্থ্য দফতরের প্রোটোকল মেনে।