সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: চাষের ক্ষেত ধানে ভরে যাওয়ার পরে ডাকাত দলের হামলা হয়। সেই হামলায় কাটা যায় কালী মায়ের নাক। খণ্ড খণ্ড হয়ে যায় মায়ের মূর্তি। সেই থেকে আজও নাক কালী হিসেবেই পুজো হয়ে আসছে মায়ের। 


পুরুলিয়া শহরের চিড়াবাড়ি এলাকা। কোনও পাকা মন্দির নেই। বিগত প্রায় ৩০০ বছর ধরে চিড়াবাড়ি এলাকায় অশ্বত্থ গাছের কাঠামোর ভেতর দেউলিয়া নাক কাটা কালী হিসেবেই পূজিতা হয়ে আসছেন মা। কথিত আছে, একটা সময় এই চিড়াবাড়ি এলাকায় প্রচুর ধানের জমি ছিল। তারই মাঝে ছিল বেলবেড়িয়া কালী বাড়ি। সেখানেই এলাকার মানুষ কালী পুজো করতেন। বিরাট আকৃতির পাথরের কালী মূর্তি পুজো করা হত। একসময় এই ধান ক্ষেতের সমস্ত ফসল পেকে যাওয়ার পরই ডাকাত দলের আগমন হয়। তারা সমস্ত ধান চুরি করতে আসে এই এলাকায়। স্বপ্নে প্রকট হয়ে এই ডাতকাতির ব্যাপারে চাষীদের আগাম সতর্ক করে দিয়েছিলেন স্বয়ং মা কালী। চাষীদের তাড়া খেয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। কিন্তু শোনা যায়, পরে সমস্তটা বুঝতে পেরে রাগে মা কালীর নাক কেটে দেয়। টুকরো টুকরো করে দেয় মায়ের মূর্তি। সেই টুকরো মূর্তির বিভিন্ন অংশ এখনও পড়ে রয়েছে চিড়াবাড়ি কালী মন্দিরে। অশ্বত্থ গাছের কাঠামোর ভেতর এখনও দেউলিয়া নাক কাটা কালী হিসেবেই পুজো হয়ে আসছে শতাব্দী প্রাচীন এই কালী মূর্তি।


আরও পড়ুন: Kali Puja 2021 : একসময় মন্দিরে গা-ঢাকা দিয়েছিল মারাঠা দস্যু ভাস্কর পণ্ডিত ! সেই থেকেই মালঞ্চের দেবী হলেন ডাকাত-কালী


এখনও প্রথা মেনে প্রতিদিনই কালীর পুজো করেন এলাকার মানুষ। কালী পুজোর সময় চারদিন ধরে চলে পুজো। প্রচলন আছে বলি প্রথারও। তবে কালী পুজোর দিন আলাদা উৎসবের চেহারা নেয় এই মন্দির। জেলা ছাড়িয়ে ভিন রাজ্য থেকেও পুজো দিতে আসেন বহু পুণ্যার্থী। বহু মানুষের ভিড়ে গমগম করে গোটা মন্দির চত্ত্বর।