বিশ্বজিৎ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর :
খড়গপুরের মালঞ্চের দক্ষিণা কালী (Kali puja ) মন্দিরের দেবীর ডাকাত-কালী বলে পরিচিতি।  ৩ শতক পেরিয়ে গেছে এই পুজোর। আজও ভক্তদের ভিড় এই  মন্দির প্রাঙ্গণে। 

১৭৭২ সালে গোবিন্দরাম রায় এই কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। চার চালার মন্দির। মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার কাজ নজর কাড়ে। দেবীর মুখ মোম দিয়ে তৈরি। মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করে  রায় পরিবার, তাদের আদি বাস জকপুরে। জঙ্গলাের মাঝে মন্দিরের পাশেই ছিল জমিদারদের আরেকটি বাড়ি। গোবিন্দরাম রায়ের উত্তরাধিকারী হিসেবে কালীগতি রায় পুজোর কাজ দেখাশোনা করতেন। কালীগতি ছিলেন নিঃসন্তান। তিনি মারা যাওয়ার পর মন্দিরের পুজো হলেও রক্ষনাবেক্ষনের খরচ চালানোর উৎসাহ ছিল না কারোও। বর্তমানে একটি ট্রাস্ট করা হয়েছে।

আরও পড়ুন :


সতীর করকমল পড়েছিল বলে বিশ্বাস, ইতিহাস-কিংবদন্তী মিলে-মিশে একাকার বাংলাদেশের যশোরেশ্বরী মন্দিরে


গোবিন্দরাম রায়ের জ্ঞাতি সুভাষ বোস জানালেন, 'জমিদার গোবিন্দরাম রায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ডাকাতে-কালী অনেকে বলে। এই মন্দিরের একটা ইতিহাস আছে । মারাঠা দস্যু ভাস্কর পণ্ডিত  এই মন্দিরে থাকতেন। তখনকার মালঞ্চ আর এখনকার মালঞ্চ মধ্যে অনেক পার্থক্য। এই মালঞ্চ জঙ্গলে ছিল হিংস্র জীবজন্তু।  সেই জন্য উনি এখানে আত্মগোপন করে থাকতেন। কোথাও বেরনোর আগে এখানে পুজো দিয়ে বের হতেন। সেই থেকেই ডাকাত-কালী। এখনো কিছু মানুষ ডাকাত-কালী বলেই ডাকে।' 


পুরোহিত সৌমেন্দ্র চক্রবর্তী জানালেন, প্রতিদিন মা'কে ভোগ দেওয়া হয়। আগে প্রতিদিন পাঁচপোয়া চাল দেয়া হতো। এখন তা দেয়া হয় না। তার পরিমাণ কমে গেছে। কালীগতি রায় বেঁচে থাকা পর্যন্ত হতো। তিনি মারা যাওয়ার সময় মন্দিরের নামে ষাট হাজার টাকা রেখে যান।  তন্ত্র সাধনা মতে পূজা হয়। বাদবাকি দিন বৈষ্ণব মতে যেমন পুজো হয়। যখন মন্দির তৈরি হয়েছিল তখন কোন তন্ত্রসাধকরা পঞ্চমুন্ডির আসন তৈরি করেন। 


স্থানীয় বাসিন্দা সন্ধ্যা ধারা বলেন, এই দেবী ডাকাত কালী বলেই পরিচিত। জাগ্রত মায়ের কাছে মনের কামনা পূরণ হয়।