কলকাতা: সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছিল আগেই। সুপ্রিম কোর্টেও (Supreme Court) তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' ছবিটিকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে হতে হল প্রশ্নবাণে বিদ্ধ। ভাবনার ভিত্তিতে মৌলিক অধিকার খর্ব করা যায় না বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শুধু তাই নয়, কোনও ধরনের অসহিষ্ণুতা সহ্য় করা হবে না বলেও এ দিন মন্তব্য় করে শীর্ষ আদালত।


ছবি ঘিরে বিতর্কের মধ্যেই 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' নিষিদ্ধ হয় বাংলায়। ছবিতে অসত্য এবং বিকৃত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রেক্ষাগৃহে ছবির প্রদর্শন নিষিদ্ধ করেন। রাজ্যের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন ছবির প্রযোজক। এ দিন সেই মামলাতেই তিরস্কৃত হয় রাজ্য।


এ দিন ছবি প্রদর্শন নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। আর তাতেই কড়া ভাষায় রাজ্যের সমালোচনা করেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, "ভাবনার ভিত্তিতে মৌলিক অধিকার খর্ব করা যায় না। সহ্য করা যাবে না কোনও ধরনের অসহিষ্ণুতা। ছবিটি বক্স অফিসে আলোড়ল ফেলতে পারে। মানুষ কেন দেখবে না?"


আরও পড়ুন: The Kerala Story: সুপ্রিম কোর্টে জোর ধাক্কা রাজ্যের, 'দ্য কেরালা স্টোরি' নিয়ে নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ


ছবিতে যা দেখানো হয়েছে, তাতে রাজ্যে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হতে পারে এর আগে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল রাজ্য। সেই প্রসঙ্গে এ দিন প্রধান বিচারপতি বলেন, "আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা সরকারের কাজ। প্রতি ছবিতেই কেউ না কেউ সমালোচিত হবে। কোনও জেলায় বিশেষ শর্তে যদি নিষেধাজ্ঞা থাকত, তাহলে ভিন্ন কথা। পুরো রাজ্যে ছবির প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার, 8 মে ছবির ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, তা তুলে নিচ্ছি। এই নিষেধাজ্ঞার কোনও ভিত্তি আছে বলে মনে হয় না।"


রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি মহারাষ্ট্রের নিদর্শন তুলে ধরেন। সেখানে ছবির প্রদর্শনে অশান্তি হয়েছিলেন বলে জানান। তার পাল্টা ছবির প্রযোজকের আইনজীবী হরিশ সালভে যুক্তি দেন, অশান্তি ঘটে থাকলেও মহারাষ্ট্র সরকার ছবিটি নিষিদ্ধ করেনি। সেখানে, ছবিটি চলছে, কোনও সমস্যা নেই। শুধুমাত্র বাংলা সরকারই উদ্বিগ্ন যে এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে।


দু'পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, "যে কোনও ১৩ জন ব্যক্তি একটি ছবিতে আপত্তি করতে পারেন, যদি না কার্টুন বা খেলা দেখান। প্রতি ছবিতেই কেউ না কেউ সমালোচিত হবে। আমরা তামিলনাড়ু সরকারের বক্তব্য নথিভুক্ত করছি যে, তারা কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করেনি। ছবিটি না দেখানোর জন্য প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের কোনও চাপ দেওয়া হয়নি। আমরা নির্দেশ দিচ্ছি যে, সিনেমা হলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের ওপর সরকার বা তার জনগণ কোনও ধরনের চাপ সৃষ্টি করবে না।" সব মিলিয়ে ছবি নিষিদ্ধ করা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য় সরকার।