হংসরাজ সিংহ, পুরুলিয়া : ওড়িশার সিমলিপালের জঙ্গল থেকে পালানো বাঘিনীর জঙ্গলমহল সফর চলছেই। এক জেলা থেকে আরেক জেলা, একের পর এক ফাঁদ এড়িয়ে বারবার জায়গা বদল করছে বাঘিনী। ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ার পর এবার বাঁকুড়া। আজ সকালে রানিবাঁধের গোপালপুর গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে বাঘিনীর গতিবিধি টের পাওয়া গেছে। সিমলিপাল থেকে উধাও হওয়া বাঘিনীর সন্ধান প্রথম মিলেছিল ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি ও কাঁকড়াঝোড়ে। এরপর পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে পালিয়ে আসে বাঘিনী। গতকাল মানবাজার ২ নম্বর ব্লকের ডাগরডি জঙ্গলে তার নড়াচড়া টের পাওয়া যায়। রাতে বন দফতরের কর্মীদের চোখে ধুলো দিয়ে জাল টপকে পালায় বাঘিনী। আজ সকালে তার ঠিকানা ছিল মানবাজার ১ নম্বর ব্লকের ধানাড়া এলাকা। বন দফতর জানায়, শুশুনিয়া হয়ে মানবাজারে আসার পথে, রাস্তার একাধিক জায়গায় বাঘিনীর পায়ের ছাপ মেলে। এর কিছুক্ষণ পরেই বাঁকুড়ার রানিবাঁধে তার হদিশ মেলে। যদিও এখনও পর্যন্ত দেখা মেলেনি বাঘিনীর।
বাঘিনীকে বাগে আনতে কী না করেছে বনদফতর। খাঁচা পাতা হয়েছে। খাঁচার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পাতা হয়েছে জালও। টোপ হিসেবে খাবারও রাখা হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও রেডিও কলারের মাধ্যমে শুধুই নিজের অবস্থানের জানান দিয়েছে এই বাঘিনী। না ফাঁদে পা দিয়েছে। না টোপ গিলেছে। অথচ খিদের জ্বালায় জঙ্গলে চড়তে যাওয়া গবাদি পশুদের উপর হামলা চালিয়েছে এই বাঘিনী। কিন্তু কোনও ভাবেই বাগে আসছে না এই বাঘিনী।
খাঁচার পাশ দিয়ে ঘুরলেও খাচ্ছে না টোপ। দেখা যাচ্ছে, টোপের ছাগল নয়, শিকার করেই খিদে মেটাচ্ছে বাঘিনী। টোপ দেওয়া ছাগল ছুঁয়েও দেখছে না বাঘিনী, এদিকে চড়তে চড়তে ঘাড় মটকাচ্ছে জঙ্গলে যাওয়া ছাগলের। টোপে অরুচি, পছন্দ গৃহপালিত গবাদি পশু। মৃত ছাগলের শরীরে থাবার চিহ্ন দেখে বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না এ কার কীর্তি। তবুও নিশ্চিত হতে পরীক্ষা নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বনবিভাগ। বাঘিনীকে বাগে আনতে ঘুম পাড়ানি গুলি নিয়ে তৈরি বনদফতরের ট্রানকুলাইজার টিম। কিন্তু দেখা নেই রয়্যাল বেঙ্গলের। ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে উধাও হয় দুই বাঘিনী। গলায় পরানো রেডিও কলারের মাধ্যমে ঝাড়খণ্ডে খোঁজ মেলে একটি বাঘিনীর। অন্যটি পাড়ি দিয়েছিল বাংলায়। সেই এখনও বাগে আসেনি।
আরও পড়ুন- সরকারের নির্দেশকেই বুড়ো আঙুল! সরকারি হাসপাতালেই রেফারেল বেনিয়মের বড় অভিযোগ?
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।