বহরমপুর: রাজ্যের ১০৮ টি পুরসভায় চারিদিকে তৃণমূলের জয় জয়কাল। ঠিক সেই ধারাই দেখা গেল মুর্শিদাবাদের বহরমপুরেও। সেখানে অধীর চৌধরীরর গড়ে ধস। কংগ্রেসের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে সেখানে ২৮টি ওয়ার্ডে ভোট হয়েছিল। সেখানে ওয়ার্ডে জয় পেয়ে নতুন বোর্ড গঠন করার পথে। মাত্র ৬টি পুরসভায় জয় হাসিল করে নিয়েছে কংগ্রেস। ৩ দশক পরে বহরমপুর হাতছাড়া কংগ্রেসের। মুর্শিদাবাদের ৭টি পুরসভার মধ্যে ৬টি তে জয় তৃণমূলের।


২০১৬ বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের সঙ্গে জোট ভেঙে যায় কংগ্রেসের। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে বহরমপুরে মাটি আলগা হতে থাকে তাদের। বামেদের সঙ্গে জোটেও সেখানে কোনও ইতিবাচক ফল হয়নি। এবার পুরভোটে তৃণমূলের কাছে শেষ পর্যন্ত হারতে হয় অধীররঞ্জন চৌধুরীর দলকে। ফল ঘোষণার পর অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ''বাংলার মানুষের ভোটদানের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে এবার। এরপর এই ফলের কোনও মূল্য আছে কি না জানি না। এর আগে এই পুরসভা দীর্ঘদিন কংগ্রেসের ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়প্রিয় হতে পারেন, কিন্তু তাঁর বাংলার মানুষের ওপর কোনও ভরসা নেই।"


এদিকে, উত্তর ২৪ পরগনার ৫টি পুরসভা বিরোধীশূন্য। ব্যারাকপুর, নৈহাটি, হালিশহর, কাঁচড়াপাড়া, বরানগর বিরোধীশূন্য। অধীর চৌধুরীর কংগ্রেসের গড় হিসেবে পরিচিত বহরমপুরে যেমন কংগ্রেসের ধাক্কা লেগেছে, তেমনই কাঁথিতে শুভেন্দু অধিকারীর গড়েও ধাক্কা বিজেপির। 


শুভেন্দুর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর কাঁথি পুরসভায় এই প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। তৃণমূলে থাকার সময় বিভিন্ন সময়ে শিশির অধিকারী থেকে শুরু করে সৌম্যেন্দু অধিকারী, পরিবারের একাধিক সদস্য কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যানের পদে ছিলেন। শেষবারও চেয়ারম্যান হন সৌম্যেন্দু অধিকারী। এবার অধিকারী পরিবার ছাড়াই ভোটে নেমেছিল তৃণমূল। অন্যদিকে,অধিকারী পরিবারের মেজো ছেলের লড়াই ছিল এবার পদ্মশিবিরের হয়ে। যদিও  এবার শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির কাউকে প্রার্থী করা হয়নি। তবে বিজেপির হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন শুভেন্দু। তিনি প্রচার  করলেও, দীর্ঘ ৩৬ বছর পর এবার কাঁথি পুরভোটে অধিকারী পরিবারের কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না। কিন্তু বিজেপি শিবিরের হাল ছিল শুভেন্দুর কাঁধেই।  অন্যদিকে, রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির ছেলে সুপ্রকাশ গিরি ছিলেন তৃণমূল শিবিরের মুখ।পুরভোটের ফলাফলে বাজিমাৎ তৃণমূলের। বলাই বাহুল্য,জিতেছেন সুপ্রকাশ গিরিও।