অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে বেহুঁশ করার সময় মৃত্যু হল দাঁতাল হাতির (Elephant Death)। ঝাড়গ্রামের (Jhargram) ঘটনা। বিড়িহান্ডি বিটের কাজলার উন্মত্ত ওই হাতিটিকে ট্র্যাক করা হয়। তার পরই এই ঘটনা।


কী ঘটেছিল?
গত এক মাসে হাতির আক্রমণে অন্তত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে ঝাড়গ্রামে। কাল অর্থাৎ, শনিবার তাই বন দফতর ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে বেহুঁশ করার চেষ্টা করে দাঁতালটিকে। সকাল থেকে ঝাড়গ্রাম বনদফতরের কর্মীরা বিড়িহান্ডি বিটের  কাজলার জঙ্গলে উন্মত্ত হাতিটিকে ট্র্যাক করেন। পরে বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে তাকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। তার পর সেটি অজ্ঞান হয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চোখ বেঁধে তাকে গাড়িতে তোলা হয়। পরে বন দফতর জানিয়েছে, হাতিটিকে জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসার সময় পথেই সে মারা যায়। কিন্তু কেন? জানতে ময়নাতদন্তের করা হবে বলে বলে বন দফতর সূত্রে খবর।তার পরই হাতিটিকে দাহ করা হবে।


নতুন নয়...
গত মার্চেই জঙ্গলে পাতা তুলতে গিয়ে হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছিল এক মহিলার। ঘটনাটি ঘটে নয়াগ্ৰাম থানার নিগুইয়ের জঙ্গলে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর মেলে, মৃতের নাম দৈমন্তি মাহাতো। বয়স ২৪ বছর। তাঁর বাড়ি নয়াগ্ৰাম থানার বড়নিগুই গ্রামে। সেই মাসের গোড়াতেই একেবারে প্রকাশ্য দিবালোকেই তাণ্ডব চালায় হাতির দল। খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে তারা। ফসল তো বটেই, ঘরবাড়িরও ক্ষতির আশঙ্কা করেছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে বিষয়টি বন দফতরকে জানানো হয়েছিল। বন দফতরের পক্ষ থেকে ওই এলাকার গ্রামবাসীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে বনদফতরের কর্মীরা হাতির দলের গতিবিধির উপর নজরদারি শুরু করে। তা সত্ত্বেও ওই এলাকার বাসিন্দারা  হাতির হামলার আশঙ্কায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলে জানান। পশ্চিমের এই জেলায় হাতির তাণ্ডব অবশ্য একেবারে অজানা কিছু নয়। মাঝেমধ্যেই তাদের দাপটে ফসলের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়। গত বছর জুলাইয়ে যেমন একই ঘটনা ঘটেছিল ঝাড়গ্রাম ব্লকে। পাশাপাশি ঝাড়গ্রামে হাতির হানায় প্রাণহানির ঘটনা একেবারে নতুন নয়। গত বছর অগাস্ট মাসে চারজনের মৃত্যুতে ঝাড়গ্রামে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতিবাদে ঘটনার দিন সকালে ঝাড়গ্রাম-জামবনি রাস্তা অবরোধ করা হয়েছিল। তাঁদের অভিযোগ, বন প্রতিমন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায় ঘটনা ঘটলেও তিনি ঘটনাস্থলে আসেননি। প্রতিক্রিয়া জানতে মন্ত্রীকে ফোন করা হলেও তাঁর ফোন ছিল সুইচড অফ। সব মিলিয়ে হাতির আতঙ্কে ঘুম ছুটে যায় ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দাদের। 


আরও পড়ুন:সকন্যা তিহাড়ে অনুব্রত, খাঁ খাঁ করছে বাড়ি-কার্যালয়, বীরভূমে বৈতরণী পার হবে তৃণমূলের!