সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা:  দেশের ব্যাঘ্র প্রকল্পকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে হাতি সংরক্ষণ প্রকল্পের সঙ্গে (Tiger and Elephant Projects)। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে প্রমাদ গুনছেন বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে আক্ষেপ প্রকাশ করলেন পশ্চিমবঙ্গ ওয়াইল্ড লাইফ বোর্ডের সদস্য় বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীও। ব্যাঘ্র প্রকল্পের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার কলকাতায় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় আক্ষেপ প্রকাশ করলেন তিনি (Sundarbans Tiger Reserve)। 


সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভারতের ব্যাঘ্র প্রকল্প। হাতি সংরক্ষণ প্রকল্পের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে 'প্রজেক্ট টাইগার'। আর এতে বাঘ সংরক্ষণে বনমন্ত্রকের উদাসনীতা নিয়ে সরব বিশেষজ্ঞরা। ব্য়াঘ্র প্রকল্পকে হাতি সংরক্ষণের প্রকল্পের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া নিয়ে আক্ষেপ করলেন পশ্চিমবঙ্গ ওয়াইল্ড লাইফ বোর্ডের সদস্য় বিশ্বজিৎবাবু। (International Tiger Day)

ভারতের ব্যাঘ্র প্রকল্পের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার কলকাতায় এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানেই আক্ষেপ করেন বিশ্বজিৎবাবু। তিনি বলেন, "বরাদ্দের বণ্টন নিয়ে স্পষ্ট ভাবে কিছু জানানো হয়নি। পশুর সংখ্যার নিরিখে কি টাকা দেওয়া হবে? বলা হয়নি কিছুই। সুন্দরবনের মতো এলাকা, যেখানে হাতি নেই, সেখানে কী হিসেবে টাকা দেওয়া হবে? বরাদ্দ কি তাহলে আরও কমবে? সবই সময় বলবে।"


আরও পড়ুন: Kolkata News : বড়সড় আর্থিক স্বস্তি কলকাতাবাসীর, জোড়া ট্যাক্সের গেরো থেকে মুক্তি বড় অংশের পুর-বাসিন্দাদের


ব্যাঘ্র প্রকল্প নিয়ে গত বছরই লম্বা-চওড়া ভাষণ দিতে শোনা যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। ব্যাঘ্র প্রকল্পকে সফল বলে ঘোষণা করেন তিনি। তার পর নমিবিয়া থেকে ভারতে চিতার পুনর্প্রবর্তন  নিয়ে প্রচার চলে বিস্তর। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় অরণ্যে সম্প্রতি একের পর এক আটটি চিতার মৃত্যু হয়। তাতে প্রশ্নের মুখে পড়ে সরকারি ব্যবস্থাপনা। সেই আবহেই সম্প্রতি প্রজেক্ট টাইগার এবং প্রজেক্ট এলিফ্যান্টকে মিলিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু মন্ত্রক।


চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই দুই প্রকল্পকে মিলিয়ে দেওয়ার ঘোষণা হয়। ২৩ জুন সেই মর্মে নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের বরাদ্দ কমাতেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত বলে অভিযোগ উঠছে। গত দু'বছরে সুন্দরবনের বরাদ্দ এমনিতেই কমেছে। যেহেতু সুন্দরবনে হাতি নেই, তাই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে বরাদ্দ আরও কমবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 


জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ নথি অনুযায়ী, বিগত দুই অর্থবর্ষে সুন্দরবনকে মাত্র ৮.৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়। অথচ মোট বরাদ্দ ছিল ১৫.৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত দু'বছরে বরাদ্দের অর্ধেকই হাতে পেয়েছে সুন্দরবন। তাই বাঘ সংরক্ষণ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়াস শুরু হয়েছে। এর জন্য় বাঘের গায়ের রঙের একটি ট্য়াক্সি রাস্তায় নামানো হয়েছে। আগামী দু'দিন কলকাতার রাস্তায় ঘুরবে এই ট্য়াক্সি।