কলকাতা: তিলজলায় শিশুকন্যাকে খুনের ঘটনায় রাজ্যকে নোটিস পাঠাতে চলেছে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন (National Commission for Protection of Child Rights)। রাজ্য পুলিশের ডিজি ও মুখ্যসচিবকে পাঠানো হচ্ছে নোটিস। ৭ বছরের শিশুকন্যাকে খুনের অভিযোগ ঘিরে রবিবার রাত থেকে তিলজলা এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। গতকাল রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বন্ডেল গেট এলাকা। এবার এই ঘটনা নিয়ে তৎপর হল জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। শিশুকন্যাকে খুনের বিষয়টি সম্পর্কে কমিশনের তরফে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে।


তিলজলায় শিশুকন্য়ার নৃশংস হত্য়াকাণ্ড ঘিরে, রবিবার রাত থেকে সোমবার বিকেল অবধি তুলকালাম চলল বিস্তীর্ণ অংশে।সপ্তাহের প্রথম দিনে রাস্তায় বেরিয়ে নাকাল হতে সাধারণ মানুষকে। বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ৩ ঘণ্টা স্তব্ধ শিয়ালদা দক্ষিণ শাখার ট্রেন চলাচল।পথ অবরোধের পাশাপাশি রেল অবরোধের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায় শিয়ালদা দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল। লাইন দিয়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হয় যাত্রীদের। 


অন্ধ-বিশ্বাসের কারণেই কি চলে গেল শিশু কন্যার প্রাণ? তান্ত্রিকের পরামর্শেই সন্তান পাওয়ার আশাতেই কি নাবালিকাকে খুন করা হয়? যে ৭ বছরের নাবালিকার নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘিরে রবিবার রাত থেকে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে তিলজলা, সেই ঘটনায় ধৃত অলক সাউকে জেরায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে দাবি, নাবালিকাকে খুনের কথা জেরায় স্বীকার করেছেন অলক সাউ। জেরায় সে জানিয়েছে, ২০২০ সালে বিয়ে হয়েছে তবে, তার কোনও সন্তান নেই। বর্তমানে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিহার রয়েছেন। এর আগে বেশ কয়েকবার স্ত্রীর গর্ভপাত হয়। কলকাতার এক তান্ত্রিক তাকে বলেছিল, নবরাত্রিতে নাবালিকাকে বলি দিলে সন্তান পেতে বাধা থাকবে না। তাই তান্ত্রিকের পরামর্শ মেনেই প্রতিবেশীর ৭ বছরের শিশুকন্যাকে অপহরণ করে খুনের পরিকল্পনা করে।

কীভাবে নৃশংস খুন নাবালিকাকে? পুলিশ সূত্রে দাবি,প্রথমে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে মেরে অজ্ঞান করে ধৃত। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে পাটের দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। রাতে তান্ত্রিকের কাছে দেহ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। রবিবার সকাল থেকে তিলজলা এলাকার বাসিন্দা ওই নাবালিকার খোঁজ মিলছিল না। নাবালিকারা যে আবাসনের বাসিন্দা, সেখানেই অন্য ফ্লোরের একটি বন্ধ ফ্ল্যাটে সন্ধেয় তাঁর মৃতদেহ মেলে। স্থানীয়দের দাবি, গ্যাসের সিলিন্ডারের পাশে রাখা একটি বস্তায় মুখ বাঁধা অবস্থায় মৃতদেহ পড়েছিল। নজর ঘোরাতেই তান্ত্রিকের গল্প?পুলিশের অনুমান, তদন্তের মোড় ঘোরাতে তান্ত্রিকের গল্প ফাঁদছে অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, এর নেপথ্যে আদৌ কোনও তান্ত্রিকের ভূমিকা আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত অপেক্ষা করা হচ্ছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের।


আরও পড়ুন: Recruitment Scam: প্রাথমিকে শিক্ষক পদের দর ১০ লক্ষ! রেট চার্ট বানিয়ে চাকরি বিক্রি নীলাদ্রির,দাবি সিবিআইয়ের