হিন্দোল দে, কলকাতা: ২১ জুলাইয়ের সভায় না যাওয়ায় কলকাতার ৩৭ নম্বর রুটের বাস কর্মীদের সাসপেন্ডের অভিযোগ উঠল তৃণমূল প্রভাবিত বাস কর্মী ইউনিয়নের বিরুদ্ধে। প্রায় ৫০ জন বাস কর্মীকে সাসপেন্ড করার অভিযোগে সকাল ৯টার পর থেকে ঢাকুরিয়া-হাওড়া ৩৭ নম্বর রুটের বাস বন্ধ। যদিও সাসপেনশনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল প্রভাবিত বাস কর্মচারী ইউনিয়ন।
তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ। ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে শাসকদলের সবথেকে বড় কর্মসূচি। জেলা থেকে কর্মী, সমর্থকদের ঢল নেমেছিল। কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো থেকেও মিছিল করে সমাবেশস্থলে আসেন নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে তৃণমূল কর্মী, সমর্থকরা। ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস। বাসে করে দলে দলে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা গিয়েছিলেন ধর্মতলায়। ২১ জুলাইয়ের সভায় না যাওয়ায় ঢাকুরিয়া-হাওড়াগামী ৩৭ নং রুটের প্রায় ৫০ জন বাস কর্মীকে সাসপেন্ড করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত 37 ও 37A বাস ওয়ার্কার ইউনিয়নের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে, এদিন সকাল ৯টা থেকে ওই রুটে বাস বন্ধ রেখে প্রতিবাদে সামিল হলেন বাস কর্মী ও মালিকদের একাংশ। বাস মালিক রঞ্জিত সরকার বলেন, "কাউন্সিলর বলেছে ৫ টা বাস দিতে। কোনও বার পয়সা দেয় না। ৫ টা বাস দিয়েছিলাম। অনেক স্টাফ আসতে পারেনি, সেই কারণে আজ বসিয়ে দেয়। ১ মাস পর্যন্ত বাস চালানো যাবে না। ৫০ জন স্টাফ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।''
তৃণমূল পরিচালিত বাস কর্মী ইউনিয়নের সভাপতি কলকাতা পুরসভার ৯৩ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মৌসুমী দাস। তিনি অবশ্য সাসপেনশনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, "পুরো কথাটা মিথ্য়া। পুরো প্রচার মিথ্য়া। গতকাল আমরা ৫টা বাস নিয়েছিলাম। ৪ টে বাস আমাদের এলাকা থেকে যারা কর্মী তাঁরা গেছে। ১ টা বাসে আমাদের এখানকার ইউনিয়নের লোকেরা গেছে। আজ ৪৪ টা বাস চলেছে। দু তিনটে বাসের মালিক। তারা বিজেপি মানসিকতার। কালকে এত লোক দেখে, আমাদের সমাবেশে এত মানুষ চলে গেছেন স্বাভাবিকভাবে তাঁদের একটা ঈর্ষার কারণ হয়েছে। কোনও সাসপেনশন তাঁরা যে বলছেন তাহলে তো সাসপেনশন লেটার দেখাতে হবে।''
এদিকে তৃণমূলের ২১ জুলাই উপলক্ষে শহর স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। জল গড়িয়েছিল হাইকোর্টেও। যা নিয়ে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ কলকাতা পুলিশকে কড়া বার্তাও দিয়েছিলেন। এরপরই তৎপর হয় পুলিশ। একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গতকাল বিচারপতি ঘোষের মুখে শোনা যায় প্রশংসা। সোমবার ছিল সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন। পুলিশের কাছে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছিল যান-শাসনের। পথে নেমেছিলেম পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। ঘুরে দেখেন শহরের বিভিন্ন রাস্তা। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ লালবাজার থেকে বেরিয়ে অফিস পাড়া ডালহৌসি ঘুরে চলে যান হাইকোর্ট চত্বরে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে রাস্তায় নেমেছিল প্রচুর পুলিশও। হাইকোর্ট চত্বর ঘুরে সটান ধর্মতলার সমাবেশস্থলে যান পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। সেখানেও নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখেন তিনি।