ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর: কাঁথির (contai) দুলালপুরে তৃণমূলের (TMC) অন্দরের (infight) বিবাদ থামছেই না! পদত্যাগের (resignation) সিদ্ধান্তই অনড় রইলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি (TMC Area Committe President)।
কী পরিস্থিতি?
গত ১০ ডিসেম্বর, তৃণমূল পরিচালিত দুলালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান-সহ ৭ জন সদস্য ইস্তফা দেন। দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দেন তৃণমূলের দুলালপুরের অঞ্চল সভাপতি মলয় সামন্তও। ইস্তফাপত্রে দলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন পদত্যাগীরা। ১২ ডিসেম্বর পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলার সভাপতি নেতৃত্বে পদত্যাগীদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। এই বৈঠকের পরে পদত্যাগীরা ইস্তফাপত্র প্রত্যাহারে রাজি হন। কিন্তু তার পরের দিনই সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি আনোয়ার উদ্দিনের নেতৃত্বে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁর অনুগামীরা। এরপর সোমবার এলাকার সমস্ত বুথ সভাপতিকে নিয়ে আলোচনায় বসেন পদত্যাগী অঞ্চল সভাপতি। বৈঠকর পর দলীয় পদে থাকতে চান না বলে ফের স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। মলয় সামন্তের কথায়, 'আমরা কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিকে সমস্ত কথা জানিয়েছিলাম। উনি সবটা মিটিয়ে দেওয়ার বিশ্বাস দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে দেখলাম, তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সংখ্যালঘু সভাপতি পঞ্চায়েতের সামনে আমাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান।' এনিয়ে কটাক্ষ করতে দেরি করেনি বিজেপি।
কটাক্ষ বিরোধী শিবিরের...
বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অসীম মিশ্র বলেন, 'সবই কাটমানির ব্যাপার। ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোল। এখন সাধারণ মানুষের থেকে বাঁচতে এইসব নাটক করা হচ্ছে। কিন্তু ওঁরা যতই চেষ্টা করুন, মানুষের ক্ষোভ থেকে বাঁচতে পারবেন না।' অন্তর্কলহের বিষয়ে কাঁথি সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতির অবশ্য দাবি, ' বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা দলীয় নেতৃত্বকে ওঁর সঙ্গে কথা বলতে বলব। যাতে সমস্যা মিটিয়ে ফেলা যায়। দলের মধ্যে নেতৃত্বের মধ্যে মতবিরোধ হতে পারে। সেখানে কাট মানির কোন ব্যাপার নেই। বিজেপির কোনও কথার গুরুত্ব নেই ।' পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের নানা জায়গায় গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ অস্বস্তি বাড়াচ্ছে শাসক শিবিরের। গত মাসের শেষ দিকে যেমন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। সে দিন মঞ্চে উপস্থিত না থাকায় ব্লক সভাপতিকে সতর্ক করেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। অন্যদিকে তাঁদের এলাকায় অনুষ্ঠান হলেও, আমন্ত্রণ না জানানোর অভিযোগ তুললেন আরেক বিধায়ক ও ব্লক সভাপতি। ভরতপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, 'এখানকার মাদারের সভাপতি, তাঁকেও অনুরোধ করব, আপনি যদি রাজনীতির মঞ্চে টিকে থাকতে চান, প্রতিযোগিতা করুন, সেই প্রতিযোগিতা কাউকে টেনে নামানোর প্রতিযোগিতা নয়। মুর্শিদাবাদে ফের তৃণমূল বনাম তৃণমূল!' অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকায়, এক ব্লকের সভাপতিতে কার্যত সতর্ক করে দেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। আমন্ত্রণ পাননি বলে পাল্টা দাবি করেন ব্লক সভাপতি। তাঁকে না জানিয়েই, এলাকায় কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কও।
আরও পড়ুন:সম্পর্কের সুতো ছিঁড়েছে আগেই, এ বার আদালতে সৌমিত্র-সুজাতা, আইনি বিচ্ছেদ চাইলেন দুজনই