প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : জীবনকৃষ্ণ সাহার (Jiban krishna Saha) ফোনেই কি লুকিয়ে দুর্নীতির তথ্য ? যাবতীয় কৌতুহলের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা তৃণমূল বিধায়কের জোড়া ফোনের ফরেন্সিক পরীক্ষার অনুমতি পেল সিবিআই (CBI)। ‘তৃণমূল বিধায়কের ২টি মোবাইল ফোনে প্রচুর তথ্য থাকতে পারে। সেই তথ্য খতিয়ে দেখতে ফোনের ফরেন্সিক পরীক্ষার প্রয়োজন’, আদালতে এমনটাই আর্জি জানায় সিবিআই। যে আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। উল্লেখ্য, সিবিআই তল্লাশির সময় পুকুরে ২টি মোবাইল ফোন ফেলে দেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে পুকুর ছেঁচে মোবাইল দুটি শেষমেশ উদ্ধার করে সিবিআই।
জলে ফেলে দিলেও এখনও ঠিক আছে বিধায়কের দ্বিতীয় মোবাইল ফোন, সিবিআই সূত্রে খবর। অপর একটি মোবাইল অবশ্য পাওয়া গিয়েছিল ডাঙাতেই। একটি গাছের তলায়। দু'টি ফোন উদ্ধার করতে লেগেছিল প্রায় ৬৬ ঘণ্টা। প্রায় ৩ দিন ধরে তৃণমূল বিধায়কের ২ টি মোবাইল খুঁজতে গিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নাকানিচোবানি তো খেতেই হয়েছিল সঙ্গে কার্যত জলেই গিয়েছে হাজার হাজার টাকা। পুকুর ছেঁচা সহ বিভিন্ন কাজ মিলিয়ে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা ।
গত শুক্রবার মুর্শিদাবাদের আন্দিতে, জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে সিবিআই। তাদের দাবি, ফোন দুটি বাজেয়াপ্ত করে টেবিলে রাখা ছিল। আচমকা গোয়েন্দাদের থেকে নিজের ২টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে সেগুলি বাড়ি লাগোয়া পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেন তৃণমূল বিধায়ক ! এরপরই শুরু হয় দক্ষযজ্ঞ পর্ব। কিন্তু কী এমন ডিজিটাল এভিডেন্স রয়েছে, যা নষ্ট করতে, পুকুরে ফোন ছুড়ে ফেলার মতো নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি করলেন জীবনকৃষ্ণ? সিবিআই দাবি, বড়ঞার বিধায়ক কখনও এজেন্টের মাধ্যমে, কখনও মিডলম্যানের মাধ্যমে, কখনও নিজেই চাকরিপ্রার্থীদের থেকে কোটি কোটি টাকা তুলেছেন। টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। OMR শিট বিকৃত করে যোগ্য প্রার্থীদের প্রতারণা করেছেন। বিধায়কের বাড়ি থেকে এই সংক্রান্ত প্রচুর নথি উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করেছে সিবিআই।
নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি গরু পাচার মামলাতেও জড়িয়ে গিয়েছে। সূত্রের দাবি, জীবনকৃষ্ণ সাহা অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ। সূত্রের দাবি, বীরভূমের ইলামবাজার থেকে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা হয়ে বাংলাদেশে গরু পাচার হত। জীবনকৃষ্ণের বিধানসভা বড়ঞা। CBI সূত্রে দাবি, এখান দিয়ে গরু নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রোটেকশন দেওয়া ও সাহায্য করতেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশে জীবনকৃষ্ণ সাহা এই কাজ করতেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- লক্ষ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি, অন্য জেলাতেও ছড়িয়ে জাল, CBI-এর হাতে 'জীবন-পঞ্জি'