পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: তৃণমূল না বিজেপি? পঞ্চায়েত ভোটের আগে বাঁকুড়ার বাসিন্দা বিভীষণ হাঁসদাকে নিয়ে ফের টানাপোড়েন। বিভীষণকে নিজেদের সমর্থক বলে দাবি তৃণমূলের। বিভীষণের অসুস্থ মেয়ের চিকিত্সা নিয়ে অমিত শাহর বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতিভঙ্গেরও অভিযোগ তুলেছে তারা। যা অস্বীকার করেছে বিজেপি।
ভুখা মুখে ভরা গ্রাস তুলে ধরবার আগে, প্রশ্ন করো তুমি কোন্ দলে? শঙ্খ ঘোষের কবিতার এই পংক্তিগুলোর সঙ্গে আক্ষরিক অর্থে মিলে গিয়েছে বাঁকুড়ার চতুরডিহি গ্রামের বাসিন্দা বিভীষণ হাঁসদার জীবন। আদিবাসী মানুষটিকে ঘিরে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের একই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে।
তৃণমূল না বিজেপি? বিভীষণ কোন দলে? বাঁকুড়ার তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "উনি আমাদের লোক। আমাদের সঙ্গে আছেন। মাঝে কিছু পরিযায়ী লোক এসেছিল ভুল বুঝিয়ে সবকিছু করেছিল। মানুষ ওদের প্রত্যাখ্যান করেছে।" রবিবার বিভীষণের বাড়িতে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। তাঁর অসুস্থ মেয়ের হাতে ফল তুলে দিয়ে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেয় শাসকদল। বিভীষণকে নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল বছর দেড়েক আগে।
বিধানসভা ভোটের প্রচারে এসে তাঁর বাড়িতে পাত পেড়ে খেয়েছিলেন অমিত শাহ। বিভীষণের দাবি, সেইসময় তাঁর অসুস্থ মেয়েকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে চিকিত্সার প্রতিশ্রুতি দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বাঁকুড়ার চতুরডিহির বাসিন্দা বিভীষণ হাঁসদা বলেন, "অতিথি হিসেবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আপ্যায়ন করেছিলাম...তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েও পালন করেননি...আজ তৃণমূলের নেতারা এসেছিল...প্রশ্ন, আপনাকে তৃণমূলে আসার আহ্বান জানাল...আছিই তো...নতুন করে আর কী আছে।"
পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই আদিবাসী পরিবারকে নিয়ে ফের শুরু হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে দড়ি টানাটানি। বাঁকুড়া জেলা পরিষদের তৃণমূল বিধায়ক ও সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু বলেন, "বিভীষণ তৃণমূলেই আছে...বিজেপির তরফে ওকে বিভ্রান্ত করা হয়েছিল...মেয়েটা কেমন আছে পরে আর দেখেনি...তাই আমরা এসেছি।" বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা বলেন, "অমিত শাহ ওঁকে দিব্যি দিয়ে জাননি বিজেপি করতে হবে বলে...উনি ভাল মনে করলে বিজেপি করবেন...না হলে স্বাধীনতা আছে নিজের যা ভাল লাগে করবেন...কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি।"
বাঁকুড়ার চতুরডিহি গ্রামের পেশায় দিনমজুর বিভীষণ হাঁসদা কোন দলের সমর্থক, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। আর বিভীষণ ভাবছেন রাজনীতির টানাপোড়েনে মেয়ের চিকিত্সা আদৌ হবে তো?