রাণা দাস, কালনা : খড়গপুর, মেদিনীপুরের পর এবার পূর্ব বর্ধমানের কালনা (Kalna)। ফের একবার প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্টীদ্বন্দ্ব। শাসকদলের নির্বাচিত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগ দাবি করলেন তৃণমূলেরই (TMC) কাউন্সিলররা।
কী অভিযোগ কাউন্সিলরদের
পঞ্চায়েত ভোটের আগে, আবার, এক তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার চেয়ারম্য়ানের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ আনলেন তাঁরই দলের কাউন্সিলররা। কাউন্সিলরদের অভিযোগ, ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন পুর চেয়ারম্যান আনন্দ দত্ত। স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে পুরসভা পরিচালনা করা হচ্ছে।
এনিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে বারবার জানিয়েও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। এবার, চেয়ারম্য়ানের অপসারণের দাবি তুলে ক্ষোভ উগরে দিলেন, কালনা পুরসভার ১২ জন তৃণমূল কাউন্সিলর। বিক্ষুব্ধদের অন্যতম তথা কালনা পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুনীল চৌধুরী বলেছেন, 'প্রায় ৯ মাস-১০ মাস কালনা পুরসভার কোনও উন্নতি হচ্ছে না। চেয়ারম্য়ান সহযোগিতা করছেন না। আমরা কেউ দলের বিরুদ্ধে না। আমরা চেয়ারম্য়ানের বিরুদ্ধে। সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। দলকে আগেও জানিয়েছি। কোনও ব্য়বস্থা নেয়নি। ইমিডিয়েট ওকে সরানো হোক, নাহলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।'
পাল্টা চেয়ারম্যানের
পাল্টা কালনা পুরসভার চেয়ারম্য়ান আনন্দ দত্ত বলেছেন, 'ভাল কাজ করতে গেলে, সৎ কাজ করতে গেলে কারও কারও অসুবিধা হবে। তাতে কিছু এসে যাবে না। দেখুন সহযোগিতা না করলে, গতকাল যে মিটিং ছিল, সেই মিটিংয়ে তারা কী করে উপস্থিত হলেন? আমার ব্য়ক্তিগত কাজ, পুরসভা থেকে বেরিয়ে কাজ তদ্বির করা। কলকাতায় পুরভবনে যাওয়া। বর্ধমানে যাওয়া। এগুলো সব পুরসভার কাজ। কোনও ব্য়ক্তিগত কাজ নয়। পুরসভার গাড়ির লগ বুক আছে।'
প্রকাশ্যে বিরোধ খড়গপুর, মেদিনীপুরেও
এর আগে, ২১ ডিসেম্বর, তৃণমূল পরিচালিত খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্য়ান, প্রদীপ সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন, ১৮ জন তৃণমূল কাউন্সিলর। অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের কাছে চিঠিও পাঠান, কাউন্সিলরদের একাংশ। এরপর, শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে, ইস্তফা দিতে হয় চেয়ারম্য়ানকে। গত বৃহস্পতিবার, তৃণমূল পরিচালিত, মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্য়ান সৌমেন খানের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের কাছে চিঠি লিখলেন, তাঁরই দলের ১১ জন কাউন্সিলর।
ভোগান্তি সাধারণ মানুষের
এদিকে, কালনা পুরসভায় কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে পুর কর্মীরা। যার ফলে, চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। নতুন বছর পড়লেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে তৃণমূলের একের পর এক দ্বন্দ্ব বিজেপিকে কি বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেবে? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে।