কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য 'কেষ্ট' তিনি। নেতাদের কেউ কেউ আবার 'বীরভূমের বাঘ' বলেন। একাহাতে এতদিন বীরভূমে তৃণমূল গড় আগলে রেখেছিলেন বলে। সেই নিয়ে এবার মুখ খুললেন অনুব্রত মণ্ডল। গরুপাচার মামলায় জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। গত কয়েক মাস ধরে তাঁকে নিয়ে যে উপমা শোনা গিয়েছে দলের নেতাদের মুখে। সেই নিয়ে এদিন প্রশ্ন করা হলে বিতর্ক এড়াতে দেখা যায় অনুব্রতকে। (Anubrata Mondal)
গরু পাচারের দু'টি মামলা থেকেই জামিন পেয়েছেন অনুব্রত। জামিন পেয়েছেন তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলও। দিল্লির তিহাড় জেল থেকে মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেছেন তাঁরা। সেই আবহেই ফিরহাদ হাকিমের 'বাঘ' মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয় অনুব্রতকে। জবাবে তিনি বলেন, "দেখুন, এতদিন পর ফিরলাম। প্রায় দুই, আড়াই বছরের মতো। সবাই ভাল থাকুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমে আসছেন। আমার শরীর একটু অসুস্থ। পায়ে-কোমরে বেদনা রয়েছে। কোনও বিতর্কে যেতে রাজি নই আমি। আদালতকে সম্মান করি, আইন মেনে চলি। দিদির জন্য আমি আছি এবং বরাবর থাকব।" (Firhad Hakim)
অনুব্রতর গ্রেফতারির পর একাধিক বার তাঁকে 'বাঘ' বলে উল্লেখ করেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ। ২০২২ সালের ৫ নভেম্বর প্রথম বার একটি সভায় ওই মন্তব্য করেন তিনি। ফিরহাদকে বলতে শোনা যায়, "বীরভূমের বাঘকে কিছুদিনের জন্য খাঁচায় রেখেছো তোমরা। সারাজীবন পারবে না। সেই বাঘ যখন বেরিয়ে আসবে, আজ যে শিয়ালরা হুক্কাহুয়া হুক্কাহুয়া করছে, সব আবার খাঁচায় ঢুকে যাবে।"
গরুপাচার মামলায় অনুব্রত জামিন পাওয়ার পরও একই কথা শোনা যায় ফিরহাদের মুখে। অবস্থানে অনড় থেকে তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আমি বলেছিলাম, বীরভূমের বাঘকে বেশিদিন খাঁচায় আটকে রাখা যাবে না। বাঘ খাঁচার ভিতরে থাকলে শিয়াল-হায়নারা হুমাহু করে। খাঁচা থেকে বাঘ বেরোলে তারাই লেজ তুলে পালায়।" সেই নিয়েই এদিন অনুব্রতর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়।
অনুব্রত ও কন্যা সুকন্যার জেলযাত্রার পর থেকে বীরভূমের নিচুপট্টি এলাকায় তাঁদের বাড়িটি কার্যত ফাঁকা পড়েছিল। কিন্তু এদিন সেখানে উৎসবের আমেজ চোখে পড়ে। অনুব্রত এলাকায় পৌঁছতেই তাঁকে দেখে জয়ধ্বনি দেন সমর্থক ও অনুগামীরা। চলে ফুলবৃষ্টিও। গাড়ি থেকে নেমে বাড়িতে ঢোকার আগে, সকলের উদ্দেশে হাতও নাড়েন অনুব্রত। অনুব্রত জানিয়েছেন, তিনি মমতার পাশে ছিলেন এবং আগামী দিনেও থাকবেন।