কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি এবার মুখ খুললেন তৃণমূল নেতা অর্জুন সিংহ। টাকার পাহাড়ের ছবি দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে বলে স্বীকার করলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ। অর্জুনের দাবি, টাকা উদ্ধারের ঘটনায় মানুষ খারাপ নজরে দেখছে। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। দু’জন চুরি করলেও, তার দায় দলের ৯৮ শতাংশের ওপর পড়ছে।


শুক্রবার ব্যারাকপুরে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে অংশ নেন অর্জুন। সেখানেই এমন মন্তব্য করেন তিনি। অর্জুন বলেন, "মানুষ আমাদের খারাপ নজরে দেখছে। টাকার পাহাড় দেখা দেওয়ায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। চুরি করেছে দু'জন। কিন্তু ৯৮ শতাংশের গায়ে প্রশ্নচিহ্ন লেগে যাচ্ছে যে এরা সব চোর। মানুষ সবকিছুর উপর নজর রাখছেন। কিছু মানুষের জন্য অসুবিধা হচ্ছে আমাদের। দিনরাত নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।" এখনও  সময় রয়েছে, শুধরে নেওয়া প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন অর্জুন।


২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-তে গেলেও, ফের তৃণমূলে ফিরেছেন অর্জুন। দলের হয়ে এগিয়ে আসায় তাঁকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, "অর্জুন সিংহ যখন বিজেপি থেকে তৃণমূলে এসেছিলেন, নেত্রী, তাঁর পরিবার, তৃণমূলের সর্বগ্রাসী চেহারা, সন্ত্রাস, পুলিশি নিস্ক্রিয়তা, গুন্ডারাজ এবং টাকা তোলার রাজনীতির বিরুদ্ধে কথা কথআ বলেই এসেছিলেন। তার জন্য পদত্যাগ করেছিলেন। তার পর জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি-র টিকিটে। এখন আবার তৃণমূলে গিয়ে টাকার পাহাড়ের কথা বলছেন। অর্জুনের থেকে দুর্নীতিবিরোধী কথা শুনতে আগ্রহী নন বাংলার সচেতন মানুষ।"


তবে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, "অর্জুন সিংহ বা কা কারও ব্যক্তিগত ভাবে কিছু বলার জায়গা নেই। কারণ মুখ্যমন্ত্রী নিজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। যত বড় মন্ত্রীই হন, তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। দল ব্যবস্থা নিয়েছে। তাই এর বাইরে কে, কী বললেন, তা নিয়ে কথার প্রয়োজন নেই। তৃণমূল অনেক বড় দল। এত বড় সরকার। ৯৯.৯৯ শতাংশ ভাল কাজ হচ্ছে। কোথাও ভুল, অপরাধ হলে শ৪স্তি হবে। আমাদের এখানে শাস্তি হয়, সরিয়ে দেওয়া হয়। শুভেন্দু অধিকারীকে কোলে তুলে রেখেছে বিজেপি।"


এ দিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এ বার টিচার্স ট্রেনিং সেন্টারের সংযোগও উঠে আসছে। ইডি-র নজরে মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সল্টলেকের মহিষবাথানের অফিস ও বারাসাতের দেবীপুরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মালিকের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চলছে। মহিষবাথানে শাটারের তালা ভেঙে ও বারাসাতে দরজা বন্ধ থাকায় কার্যত পাঁচিল টপকে ঢোকেন ইডি-র অফিসাররা। সব জায়গায় মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনী।