সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: বিজেপি থেকে ঘুরে এসে হাতে তুলে নিয়েছিলেন জোড়াফুলের পতাকা। তবে বিজেপি (BJP) থেকে জেতে সাংসদপদ এখনও বহাল রয়েছে। সেই অবস্থাতে আবারও ইঙ্গিতপূ্র্ণ মন্তব্য করে তৃণমূলকে (TMC) অস্বস্তিতে ফেললেন অর্জুন সিংহ (Arjun Singh)। দলের বিধায়ককে নিশানা করে বললেন, "টাকা বেশি রোজগার করলে, খরচও করতে হবে। জমিয়ে রাখলে ED, CBI এসে নিয়ে যাবে।"
ফের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য অর্জুন সিংহের। এবার ব্য়ারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীকেই (Raj Chakraborty) তিনি নিশানা করেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। মঙ্গলবার টিটাগড়ে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন অর্জুন। ব্যারাকপুর এবং সংলগ্ন এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, "টাকা বেশি রোজগার করলে, খরচও করতে হবে। জমিয়ে রাখলে ED, CBI এসে নিয়ে যাবে।"
শুধু তাই নয়, ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্য়ারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক রাজের কী করণীয়, তা-ও স্মরণ করিয়ে দিতে শোনা গেল তৃণমূল নেতা ও ব্য়ারাকপুরের সাংসদ অর্জুনকে। বললেন, "ব্য়ারাকপুর ও টিটাগ়ড়, দু'টো পুরসভাতেই আমাদের (তৃণমূলের) বোর্ড। আমাদের কাজ করতে হবে। সবথেকে জরুরি কাজ হল সাফাই। এত ডেঙ্গি বাড়ছে, তাই আরও কিছু কাজ প্রয়োজন। রাজ চক্রবর্তীকে বলব, শুধু সরকারি ভরসায় থাকলে সফল হবে না।"
আরও পড়ুন: Bankura News: পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে দলবিরোধী কাজ, বহিষ্কৃত ২ তৃণমূল নেতা
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে দল ছেড়েছিলেন অর্জুন। যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি-তে। তার পর, বিজেপি-র টিকিটে ব্য়ারাকপুর কেন্দ্র থেকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে হারিয়ে দেন তৎকালীন তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে। কিন্তু গতবছর ফের তৃণমূলে কামব্য়াক করেন অর্জুন। তার পর থেকে দলের একাংশের বিরুদ্ধেই একাধিক বার সরব হয়েছেন তিনি। বেশ কয়েক বার জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্য়ামের সঙ্গেও সংঘাতে জড়িয়েছেন। এবার নিশানা করলেন রাজকে।
গোটা ঘটনায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। রাজ্যেরপ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "অস্বস্তি অনুভব করছেন। উনি যে দলে গিয়েছেন, সেই দলের নেতাদের সঙ্গে বনিবনা ঠিকঠাক হচ্ছে না। আর উনি মনে হয় আশা-আশঙ্কাতেও রয়েছেন, টিকিট পাবেন, না পাবেন না। সেই জন্য় একটু বেসুরো কথাবার্তা বলছেন। বা যে চুক্তি করে ভাইপো ওঁকে নিয়েছিল, আমার মনে হয় সেই চুক্তি রাখতে পারেনি।"
যদিও শুভেন্দুর কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ অর্জুন। তাঁর বক্তব্য, "শুভেন্দুবাবুকে একটাই কথা বলব, উনি তো মাঝে মধ্য়েই বলেন, 'মমতাকে হারিয়েছি'। ব্য়ারাকপুরে নির্বাচনে লড়ুক না! কত ধানে কত চাল, বুঝে নেবে। অত বড় কথা না বলে এখানে এসে লড়ুক। কী অস্বস্তি? কোনও অস্বস্তি নেই। আমি তো এখানকার সাংসদ! আগামীদিনেও সাংসদ থাকব।" তবে শুভেন্দুকে জবাব দিলেও, অর্জুনের মন্তব্য নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।