কলকাতা: টাকার বিনিময়ে সংসদে আদানিদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে সংসদের নীতি কমিটি তলব করেছে তৃণমূল সাংসদই মহুয়া মৈত্রকে (Mahua Moitra)। একমাত্র ফিরহাদ হাকিম ছাড়া এ যাবৎ গোটা ঘটনায় মহুয়ার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছিল তৃণমূল। কিন্তু শনিবার মহুয়ার পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল জোড়াফুল শিবিরের (TMC) আরও এক নেতাকে। সংসদের নীতি কমিটি যে মহুয়াকে তলব করেছে, তা 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে দাবি করলেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।


৩১ অক্টোবর হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয় বলে সংসদের নীতি কমিটিকে জানিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া। তাতে আগামী ২ নভেম্বর তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য তলব করা হয়েছে। সেই নিয়ে এদিন সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন তৃণমূলে রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মহুয়ার পাশে দাঁড়াতেই দেখা যায় তাঁকে। 


এদিন কুণাল বলেন, "মহুয়া মৈত্রের এই বিষয়টি নিয়ে বিশদ কিছু বলব না আমি। আমাদের নেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন স্পষ্ট ভাবে অবস্থান জানিয়েছেন। তবে নীতি কমিতির তারিখ দেওয়া নিয়ে বলব, মহুয়া তো বলেছেন উনি যাবেন। ৫ নভেম্বরের পর যাবেন বলেছিলেন। নীতি কমিটির এত তাড়াহুড়ো কেন, যে ২ নভেম্বরই যেতে হবে? নীতি কমিটির কাছে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে জমা পড়ে অভিযোগ তো ৪-৫ বছর ধরে পড়ে রয়েছে? কিন্তু মহুয়ার বিষয়টির এখনই নিষ্পত্তি চান ওঁরা।"



আরও পড়ুন: Mahua Moitra: মহুয়ার আর্জিতে সায় নীতি কমিটির, ৩১ অক্টোবর নয়, ২ নভেম্বর হাজিরার নির্দেশ


কুণাল আরও বলেন, "মহুয়া তো সহযোগিতা করবে না বলেনি? ওর বেলায় এত তাড়াহুড়ো, আর শুভেন্দুর ব্যাপারে এখনও চুপ কেন নীতি কমিটি? সিবিআই তো এফআইআর-ও করেছে? ওঁর ব্যাপারে কী হয়েছে এখনও পর্যন্ত। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে চলছে।" তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও মহুয়ার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। জানিয়েছেন, মহুয়া তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন ইতিমধ্যেই। বিষয়টি নিয়ে দল নীতি কমিটিতে যাবে। 


শুধু তৃণমূলই নয়, মহুয়ার বিষয়টি নিয়ে নীতি কমিটির অবস্থানে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম-ও। দলের নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, "উনি সময় চেয়েছেন, দিয়েছে নীতি কমিটি। কিন্তু এখন নীতি কমিটি যতটা সক্রিয়, সারদার ক্ষেত্রে ততটা সক্রিয়তা দেখা যায়নি তাদের মধ্যে। বছরের পর বছর কেটে গিয়েছে।"


আদানিদের নিয়ে প্রশ্ন তুলতে মহুয়া ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে টাকা এবং উপহার নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন বিজেপি-র সাংসদ  নিশিকান্ত দুবে। মহুয়া যদিও বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। তাঁর দাবি, দর্শন তাঁর ভাল বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন। তাই জন্মদিনে লিপস্টিক, আইশ্যাডো উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও ঘুষ নেননি তিনি। মহুয়া জানিয়েছেন, বিজেপি-র কয়েক জন সাংসদের মাধ্যমেই তাঁকে টাকার অফার দিয়েছিলেন আদানি। তিনি তা গ্রহণ করেননি। অর্থাৎ প্রশ্ন না করতে টাকা দিতে চেয়েছিলেন আদানি। সেটার কেন তদন্ত হবে না, প্রশ্ন তোলেন মহুয়া।