কলকাতা: সংঘাতের খবর উঠে আসছে শাসক-বিরোধী দুই শিবির থেকেই। সেই নিয়ে বাক্যবাণও ছুটে আসছে দুই তরফ থেকে। একে একে তৃণমূলের (TMC) লোকজন ‘মন কি বাত’ (Mann Ki Baat) বলার সুযোগ পাচ্ছেন বলে এক দিকে কটাক্ষ বিজেপি-র (BJP) প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh)। এ বার তাঁর বিরুদ্ধেই রাজ্য বিজেপি-তে বিদ্রোহে উস্কানি জোগানের অভিযোগ করলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।


সোমবার সকালে দিলীপকে নিশানা করে টুইটারে কুণাল লেখেন, ‘দিলীপ ঘোষের কহিঁ পে নিগাহে, কহিঁ পে নিশানা। উনি রাজ্য বিজেপি-তে বিদ্রোহে মদত দিচ্ছেন, শাসক গোষ্ঠীর বিপাকে পড়া উপভোগ করছেন। আর নজর ঘুরিয়ে বিভ্রান্তি রাখতে কৌশলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভুলভাল বলছেন। এসব ‘ওঁর মন কি বাত’ নয়। বিজেপি-র ক্ষমতাসীনদের উত্যক্ত করাটাই ওঁর ‘মন কি চাহত’।’ কুণাল যদিও খোলসা করে কিছু বলেননি, তবে নবগঠিত রাজ্য কমিটির বিরুদ্ধে শান্তনু ঠাকুর-সহ বিজেপি-র নেতারা যে ভাবে রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তার পিছনে দিলীপের ইন্ধন রয়েছে বলেই কুণালের ইঙ্গিত, এমনটা শোনা যাচ্ছে রাজৈনতিক মহলে।



দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) নন, তিনি একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নেতৃত্ব স্বীকার করেন বলে আগেই বোমা ফাটিয়েছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নিয়ে দ্বন্দ্ব চরমে উঠলে সকলকে সংযত হতে নির্দেশ দেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। কিছু বলার থাকলে, কোনও অভিযোগ থাকলে, প্রকাশ্যে বিবৃতি না দিয়ে, তা দলের ভিতরে বলতে হবে বলে জানান তিনি। কিন্তু কোথায় বলবেন, কাকে বলবেন, দলে শোনার কেউ নেই বলে সংঘাতের আগুনে কার্যত ঘি ঢালেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)।


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee Update: সংক্রমণের হার ৩ শতাংশের নীচে, ‘ডায়মন্ড মডেল’-এর সাফল্যে আপ্লুত অভিষেক


তাতেই তৃণমূলে দ্বন্দ্ব অন্য মাত্রা পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার কল্যাণ এবং মদনদের দাবি সঙ্গত বলে মন্তব্য করেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘‘মদনদা অনেক দিন পর নিজের মনের কথা বলেছেন। উনি পুরনো রাজনীতিক। অনেক উত্থান-পতন দেখেছেন। কষ্ট পেয়েছেন। মনের কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন এখন। সত্যি তো কাকে বলবেন! যাঁর কথা বলেছেন উনি, সেই সুব্রত বক্সিকে তো বলে লাভ নেই! ওঁর সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলা, আর গাছের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলা এক কথা। অথচ মহামন্ত্রী বলছেন, কথা বলা উচিত। কিন্তু বলার লোকই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’’


কল্যাণদের মতো পুরনো নেতারা দলে এখন কোণঠাসা, তার বদলে তরুণ তুর্কিদের রমরমা চলছে বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহও। দিলীপের গালতেও সেই সুর ধরা পড়ে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলে ক্ষমতার ভরকেন্দ্র সরে যাচ্ছে। কল্যাণও তাই মুখ খুলেছেন। এত দিন একা মোদিজির ‘মন কি বাত’ হতো। এখন অনেকের মনের কথা শোনার সুযোগ হচ্ছে।’’ সোমেন্দ্রনাথ মিত্রকে সরিয়ে যেমন ‘ভাইপো’কে সাংসদ করা হয়েছে, তেমনই শ্রীরামপুর থেকে কল্যাণকে সরিয়ে দেওয়া হয়ে পারে বলেও মন্তব্য করেন দিলীপ। তাতেই নেটমাধ্যমে তাঁকে নিশানা করেন কুণাল।