কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: দশমী কাটতেই বিদ্রোহের সুর কুণালের মুখে ? কুণালের পোস্ট এবং বক্তব্য ঘিরে জোর জল্পনা বঙ্গ রাজনীতিতে। এদিন বলেন,  'প্রচণ্ড শক্তিশালী কেউ আমাকে পছন্দ না করলে আমিও তাঁকে পছন্দ করি না। পুরু হতে ভালোবাসি, আলেকজান্ডার নয়', উৎসবের আবহে কাকে ইঙ্গিত কুণালের ? কুণাল ঘোষ বলেন,  'মমতাদির সঙ্গে দিদি-ভাইয়ের সম্পর্ক, কিছু লোকের গাত্রদাহ হয়েছিল। ল্যাজে আগুন দিলে আমি হনুমান হিসেবে পারফর্ম করব। কর্মীরা কেন নেতাদের ওপর নজর রাখবে না', প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কোনও ইস্যুতে কাকে পাওয়া যায়, কাকে পাওয়া যায় না', একের পর এক মন্তব্যে জল্পনা বাড়ালেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। 'এমন একজন প্লেয়ার খেলছে, যে আমাদের টিমের, কিন্তু স্ট্রোকগুলি কি আমাদের পক্ষে যাচ্ছে, মনে হচ্ছে না', কাকে ইঙ্গিত করলেন কুণাল ? চর্চা তুঙ্গে। 

Continues below advertisement

আরও পড়ুন, DVC-র জল ছাড়া নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী, ডিভিসির অফিস ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি তৃণমূলের !

Continues below advertisement

ল্য়াজে আগুন দেওয়ায়, রাবনের সোনার লঙ্কা ছাড়খার করে দিয়েছিল হনুমান। কিন্তু সেই আখ্যানের চরিত্রে হঠাৎ কেন নিজেকে ইঙ্গিত করছে কুণাল ঘোষ? চারদিকে যখন উৎসবের আমেজ। সম্প্রীতির বিজয়া, তখন কার্যত বিদ্রোহী তৃণমূলের রাজ্য় সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, একা ওই লোকাল থানা, CBI, ED... জেল জীবন পার হয়ে দাঁড়িয়ে বলছি, আমি এখনও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু, যে মাটি হোক, আমি আমার স্টাইলেই ব্য়াট করব। আমি অন্তর থেকে অনুভব করি, আমায় কেউ ভালবাসছেন, আমি তাঁর জুতো পালিশ করে দেব। কিন্তু, আমি যদি দেখি, প্রচণ্ড শক্তিশালীও কেউ, আমার পছন্দ না হয়, আমিও তাঁকে পছন্দ করি না। আমি পুরু হতে ভালবাসি। আমার আলেকজান্ডার হওয়ার দরকার নেই। কিন্তু আমি আমার মতো থাকব, আমার মাঠে খেলব।'

কখনও স্মরণ করছেন তাঁর রাজনীতির ইতিহাস। কখনও বা রাজনীতিবিদদের ইতিকথা। তবে, তার মধ্য়েই প্রকট হয়েছে দ্বন্দ্বের সুর। কুণাল ঘোষ বলেন, একটা সময় ভয়ঙ্কর, আমি মমতাদির সঙ্গে প্রত্য়ক্ষ রাজনীতিটা অতীতে ছাত্র পরিষদ করেছি। কংগ্রেস করেছি। পরবর্তীকালে মমতাদির কাছাকাছি আসার পর, দীর্ঘদিন ধরে তাঁর সঙ্গে দিদি-ভাইয়ের সম্পর্ক। কিছু লোকের গাত্রদাহ হয়েছিল। একটা দূরত্ব হয়ে গেছিল। আমি জানি, আমি দিদিকে শ্রদ্ধা করি শুধু নয়, আমি ভালবাসি। দিদিও আমাকে সেইভাবে কাছে টেনে নিয়েছেন। আবার অভিষেক আগের থেকে অনেক বড় হয়ে গেছে। তারও বয়স বেড়েছে ইত্য়াদি... আমার পরিষ্কার কথা, আমার নানারকম ফ্য়াক্টর কাজ করে। 

প্রশ্ন: আপনি বলছেন যে, যাদের সাফোকেশন হয়, শ্বাসকষ্ট হয়, দলের সহকর্মীদের অনেকের হয়েছে, অন্য় দলে যাওয়ার উদাহরণও আছে। আপনার তেমনটা হবে না!

কুণাল ঘোষ: না, না, ওসব আমি ন্য়াকামি বলে মনে করি। সাফোকেশন কী! আমাদের দল। আমরা দলের সৈনিক। দলের নেতারা যখন বলবে, এইভাবে চলতে হবে, এইভাবে চলতে হবে... এই লাইফস্টাইল হবে, সকলের ওপর আমরা নজর রাখছি, প্রত্য়েক কর্মীরও অধিকার আছে নেতাদের ওপর নজর রাখার। কর্মীরা কেন নেতাদের ওপর নজর রাখবে না! কোন ইস্য়ুতে কাকে পাওয়া যায়, কোন ইস্য়ুতে কাকে পাওয়া যায় না, কর্মীদেরও তো নজর রাখতে হবে সেগুলো। নেতারা যেমন কর্মীদের ওপর নজর রাখবেন, কর্মীরা নেতাদের ওপর নজর রাখবে না! আমার ওসব দমবন্ধর... নেই। আমি এটাকে মনে করি, এটা একটা দল, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় নেত্রী, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় সেনাপতি, দমবন্ধ লাগলে, আমি প্রেম করব দলে, ঝগড়াও করব দলে। আমি যা বলার দলে বলব। কিন্তু, আমি ওই দমবন্ধ লাগল... তবে হ্য়াঁ, কীরকম একটা ঝাপসা, মাঝখানে আমি একটা 'সঙ্কেত' বলে উপন্য়াস লিখেছিলাম। কীরকম ঝাপসা একটা মাঠ, কয়েকজন খেলছে, এমন একজন প্লেয়ার খেলছে, তাকে মনে হচ্ছে, সে আমাদের টিমের, কিন্তু, তার স্ট্রোকগুলো কি আমাদের টিমের পক্ষে যাচ্ছে? বুঝতে পারছি না। কীরকম একটা ঝাপসা, ঝাপসা, ঝাপসা ঝাপসা লাগছে। সে ম্য়াচ খেলতে হলেও খেলব।