কলকাতা : পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের অভিযানে নামল ED। একযোগে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। ভোর থেকে লেকটাউন, নাগেরবাজার, সল্টলেক, কাঁকুড়গাছিতে চলছে তল্লাশি। প্রায় ৯ ঘণ্টা হতে চলল, এখনও রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসুর অফিস-রেস্তোরাঁয় তল্লাশি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। উল্টোডাঙার কাছে গোলাঘাটায় সুজিত-পুত্রের বেঙ্গল ধাবাতেও ED তল্লাশি। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ম্যারাথন তল্লাশি-অভিযানে নেমেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি । এদিকে সুজিত 'ঘনিষ্ঠ' দক্ষিণ দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই দত্তের বাড়ি-গোডাউনেও চলছে তল্লাশি। এছাড়াও কাঁকুড়গাছিতে অডিটর সঞ্জয় পোদ্দারের ফ্ল্যাটে এবং নাগেরবাজারে ব্যবসায়ী দীপক দে-র বাড়িতেই ED-র তল্লাশি চলছে। এনিয়ে এবার শুরু হল রাজনৈতিক তরজা।
এনিয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, "ইডি-র মুভমেন্ট বা কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির মুভমেন্টে ধাপ আছে। বাংলার মানুষ এগুলো বুঝতে পারে। আবহাওয়াটা আবহাওয়া অফিস বলে। আর ভোট আসছে কি না সেটা কেন্দ্রীয় এজেন্সির গতিবিধি বলে। আপনি দেখবেন, হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে...তৃণমূলকে কী কী ভাবে কালিমালিপ্ত করা যায়। একটা কিছু তাদের সফর হল। এরপর দেখবেন, নির্বাচন কমিশন থেকে নানাভাবে কীভাবে বিজেপিকে সাহায্য করা যায় সেই ধরনের কাজকর্ম। তারপরে দেখবেন দিল্লি থেকে অনেক নেতা-মন্ত্রী ডেইলি প্যাসেঞ্জারি শুরু করে দেবেন। মানুষ বোঝেন এগুলো।"
এর আগে ২০২৪-এর ১২ জানুয়ারি দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়িতে অভিযান চালায় ED। প্রায় ১৪ ঘণ্টা ধরে মন্ত্রীর একাধিক বাড়িতে চলে তল্লাশি । মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য়দেরও করা হয় জিজ্ঞাসাবাদ।এদিন সুজিত বসু বলেন, "ওরা প্রত্যেকবারই এটা করে। ইলেকশন যখন আসে, তখন বিশেষ করে, যারা পার্টিতে অ্যাক্টিভলি কাজ করেন, তাঁদের বাড়ি-অফিস এসব জায়গায় যায়। আজকে আমার অফিসে গিয়েছে। রেস্তোরাঁয় গিয়েছে। তা গেছে ওরা, ওদের কাজ করছে, করুক। কী বলা যাবে আর ওদেকে !"
এই ইস্যুতে সিপিএম সাংসদ ও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যর খোঁচা, "এই পুর নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বিগত ৩ বছর আগে থেকেই আদালতের নির্দেশ আছে। তদন্ত তো আর মোদির খুশিতে হচ্ছে না। এই তদন্ত সম্পূর্ণ আদালতের নির্দেশে হচ্ছে। শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে এই পুর নিয়োগ দুর্নীতি অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত। পশ্চিমবঙ্গে প্রত্যেকটি পুরসভাতেই তৃণমূল তাদের লোকেদের ঢুকিয়েছে। ওরা একটা ক্রস কানেকশন করেছে। ভাগাভাগি করে সরকারি পদ ব্যবহার করেছে। সরকারি কোষাগার শূন্য করেছে। তদন্ত আরও দ্রুত হওয়া উচিত ছিল। আরও ক্ষিপ্রতার সঙ্গে তদন্ত হলে এতদিনে এদের সবারই কারাবাস হত। যাইহোক, দেরি হলেও, এখন ইডি তদন্ত শুরু করেছে। অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।"