শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপিকে লড়তে না দেওয়ার হুমকি দিলেন তৃণমূল নেতা। কোচবিহারের তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সহ সভাপতির মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক। গতকাল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন INTTUC-র সভায় গিয়ে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দেন তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সহ সভাপতি নিরঞ্জন সরকার। ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের স্মৃতি অতীত, ২০২৩-এ বিজেপিকে অন্যভাবে দেখা যাবে, শাসকদলকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ গেরুয়া শিবিরের।
বিজেপির পাল্টা:
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও ব্যর্থতা ঢাকতে এই কথা বলা হচ্ছে এবং পঞ্চায়েত ভোটের আগে সাধারণ মানুষের মনে ভয়ের সঞ্চার করতে ক্রমাগত কুকথা বলা হচ্ছে বলে অভিযোগ বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের পাল্টা হুঁশিয়ারি, তৃণমূল যদি ভাবে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির কাউকে প্রার্থী হতে দেবে না তাহলে তারা মারাত্মক ভুল করবে, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে।
ভোটে বিরোধীদের প্রার্থী হওয়া নিয়ে এর আগেও কোচবিহারে হুঁশিয়ারি শোনা গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী এবং দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহের মুখেই শোনা গিয়েছে সেই হুমকি। সেবার দলীয় কর্মীদেরই হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। সেখানে উদয়নকে বলতে শোনা গিয়েছিল, 'বিজেপি প্রার্থী দিতে পারবে তখনই, যখন আতিয়ালডাঙার ২টি আসনে, আমাদের লোকেরা বিজেপিকে গিয়ে বলবে, তোমরা দাঁড়াও, আমরা আছি। তখন বিজেপি প্রার্থী দিতে পারবে। তাই যদি এখানে বিজেপি প্রার্থী দেয়, তাহলে শাস্তি হবে আমার নেতাদের।' সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ।
উদয়ন-উবাচ:
নিজের মন্তব্যের জন্য বারবার শিরোনামে উঠে এসেছেন উদয়ন গুহ। কখনও দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। কখনও আবার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর দাড়ি-গোঁফ উপরে ফেলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। কখনও তাঁর কথা মিলেছে দুর্ঘটনার ইঙ্গিতও। কোচবিহারেই একটি সভায় উদয়ন গুহ বলেছিলেন, 'আরেকবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে যাই, আমাদের কাছে কিন্তু খবর আছে, আমরা খবর পাই, কারা কারা ভেটাগুড়ির দিতে যায়, কখন যায়। এই ধরনের খবর যদি পাওয়া যায়, ভেটাগুড়ি যাবেন ভাল কথা, কিন্তু ফেরার সময় যদি আপনার গাড়িটা রাস্তার সঙ্গে মিশে যায়, তাহলে কিন্তু আর কারও দোষ দিতে পারবেন না। এই কথাটা যেন মাথায় থাকে।'
শুধু কোচবিহারই নয়। কখনও পূর্ব বর্ধমান, কখনও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিরোধীদের প্রতি বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে একাধিক তৃণমূল নেতাকে। যা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি। এমন ঘটনায় যদিও দলের নেতাদের পাশে দাঁড়ায়নি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, দল এমন ঘটনার প্রশ্রয় দেয় না। বিভিন্ন সময় পঞ্চায়েতে সুষ্ঠুভাবে এবং নির্বিঘ্নে ভোট করার পরামর্শ দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেও রাজ্যের বিভিন্ন কোণায় থামছে না ভোট নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য।