ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: মক্কায় (Mecca) বসে মিনাখাঁয় (Minakhan) মনোনয়নের ঘটনায় তৃণমূল নেতা (TMC Leader Nomination) মোহারুদ্দিন গাজিকে ভবানী ভবনে প্রায় ৭ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিআইডি (CID Questioning)। কাদের মদতে বিদেশে বসে মনোনয়ন? জানতে চান সিআইডি আধিকারিকরা। শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে মক্কা থেকে মিনাখাঁর কুমারজোল গ্রামে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতার মোহারুদ্দিন গাজির নামে। পরে আদালতের নির্দেশে তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়। এই নিয়ে বিডিও ও বিডিও অফিসের কর্মীদের আগেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি। এবার তাঁদের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে মোহারুদ্দিন গাজির বয়ান। প্রয়োজনে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে তাঁকে, সূত্রের খবর এমনই।
কীসের মামলা?
সিপিএমের দায়ের মামলায় পঞ্চায়েত ভোটের আগেই সামনে এসেছিল এক চাঞ্চল্য়কর অভিযোগ। অভিবাসন দফতর হাইকোর্টে জানায়, হজের জন্য় গত ৪ জুন ভারত ছাড়েন মোহারুদ্দিন গাজি। অথচ, ১২ জুন তাঁর মনোনয়ন জমা পড়ে। শুধু তাই নয়। এসে গেছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ও। কিন্তু অভিযোগ সামনে আসা ও অভিবাসন দফতরের দাবি জানাজানির পর এই ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। জালিয়াতি করেই মনোনয়ন পত্র জমা দাখিল করেছিলেন মোহারুদ্দিন গাজি, হাইকোর্টে জমা দেওয়া রিপোর্টে এমনই জানায় রাজ্য় নির্বাচন কমিশন। পরে বাতিল হয় কুমারজোল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী মোহারুদ্দিন গাজির মনোনয়ন। রাজ্য় রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলেও দেওয়া এই ঘটনায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র নজরদারিতে ডিআইজি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।মিনাখাঁর বিডিওর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, প্রতারণা সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।
গত মাসেই এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেন মক্কা থেকে মিনাখাঁয় মনোনয়ন দাখিলকারী মোহারুদ্দিন গাজি। তাঁর দাবি, প্রস্তাবক ফর্ম জমা দিতে পারেন এমন নিয়মের কথা জানতেন তিনি। তাই ফর্মে সই করে দলীয় কর্মীদের হাতে দিয়ে হজে গিয়েছিলেন। মোহারুদ্দিন গাজি বলেন, “এটা একটা মানুষের ভুল ধারণা। কিছু কিছু মানুষ ভুল ভাবাচ্ছেন। গ্রামে সকলে মিলে বসা হল। আমি মানুষের পাশে দাঁড়াই বলে মানুষ আমার নাম প্রস্তাব করে। আমাদের হজের ডেট হয়। আমার সাথীরা যাঁরা ছিলেন তাঁদের দায়িত্ব দিলাম। ৫ বছর আগে যে নির্বাচন হয়েছিল, একটা ফর্ম ছিল সই করে দিয়ে যাই। একটা গাইডলাইন আমার জানা ছিল, যে কোনও প্রস্তাবক এই ফর্ম ফিলআপ করে জমা দিতে পারেন। আমি তাই ফর্মে সই করে দিয়ে যাই। এ জন্য় আইন আছে। কেউ গিয়ে প্রতিবাদ করেছে। আইনে যা হবে আমি মেনে নিতে বাধ্য়। আইনের প্রতি আমার ভরসা আছে।’ শেষমেশ কোথাকার জল কোথায় গড়ায়, সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন:'বাংলায় ৬ লক্ষ পদ লোপ,২ কোটি বেকারের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে', রাজ্যকে নিশানা শুভেন্দুর